“শিশুর হাসি, শিশুর খেলা দেশ গড়ার মূল মেলা” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাঙামাটিতে উদযাপিত হলো বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ ২০২৫। এ উপলক্ষে শুক্রবার (১০ অক্টোবর) সকালে রাঙামাটি শিশু একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় বর্ণাঢ্য চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণ এবং সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ইয়েস বাংলাদেশ, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা শাখা। দিনব্যাপী এ আয়োজনে শতাধিক শিশু অংশ নেয় রঙ-তুলির খেলায়, আর শিশু অধিকার বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে হয় নানা আলোচনা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এডভোকেট দীপেন দেওয়ান, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ধর্ম বিষয়ক সহ-সম্পাদক, সাবেক রাঙামাটি জেলা বিএনপি সভাপতি এবং সাবেক সিনিয়র যুগ্ম জেলা জজ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মৈত্রী চাকমা, অস্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ২৯৯ নং আসনের ধানের শীষ প্রতীকধারী প্রার্থী ও প্রাক্তন শিক্ষক, লেকার্স পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ; জনাব আনোয়ার আল হক, সভাপতি রাঙামাটি প্রেসক্লাব ও সম্পাদক দৈনিক রাঙামাটি; এবং জনাব মোঃ মুজিবুল হক, সভাপতি রাঙামাটি সদর উপজেলা বিএনপি ও বিশিষ্ট সমাজসেবক। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন জনাব ইকবাল হোসেন, জেলা ভলান্টিয়ার, ইয়েস বাংলাদেশ।
প্রধান অতিথি এডভোকেট দীপেন দেওয়ান তাঁর বক্তব্যে বলেন, শিশুরা আমাদের জাতির ভবিষ্যৎ। তাদের প্রতি ভালোবাসা, যত্ন ও সঠিক শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারলেই বাংলাদেশ একটি মানবিক ও উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হবে। শিশু অধিকার রক্ষায় সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের দায়িত্ব রয়েছে।
বক্তব্যের এক পর্যায়ে তিনি আবেগঘন কণ্ঠে স্মরণ করেন রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের প্রয়াত শ্রেষ্ঠ সংগঠক জসিম উদ্দিনকে।
তিনি বলেন, গত বছর এই একই অনুষ্ঠানের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন আমাদের প্রিয় জসিম উদ্দিন। তিনি শিক্ষা ও শিক্ষার্থীদের কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করেছেন। আজ তাঁর অনুপস্থিতি আমাদের গভীরভাবে স্পর্শ করছে। ইয়েস বাংলাদেশের এই আয়োজনেও জসিম উদ্দিনের অবদান ছিল অনন্য।
বিশেষ অতিথি মৈত্রী চাকমা বলেন, শিক্ষা ও নৈতিকতার বিকাশ ছাড়া শিশুর পূর্ণ বিকাশ সম্ভব নয়। শিশুরা শুধু বইয়ের জ্ঞান নয়, সংস্কৃতি, খেলাধুলা ও শিল্পচর্চার মধ্য দিয়েও বড় হতে হবে।
বিশেষ অতিথি আনোয়ার আল হক বলেন, শিশুদের প্রতি দায়িত্বশীল আচরণ শুধু পরিবারের নয়, গণমাধ্যম ও সমাজেরও কর্তব্য। সংবাদ প্রকাশের সময় শিশুদের মর্যাদা ও গোপনীয়তা রক্ষা করা জরুরি।
বিশেষ অতিথি মোঃ মুজিবুল হক বলেন, অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাশে দাঁড়ানোই মানবতার কাজ। ইয়েস বাংলাদেশের এই কার্যক্রম মানবিক সমাজ গঠনের দৃষ্টান্ত।
চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় রাঙামাটির বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শতাধিক শিশু অংশ নেয়। বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ‘শিশুর স্বপ্নের বাংলাদেশ’ শিরোনামে তাদের রঙতুলিতে ফুটিয়ে তোলে নানা সৃজনশীল চিত্র।
প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা। পাশাপাশি সুবিধাবঞ্চিত ও পথশিশুদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ, খাতা, কলম, রঙ পেন্সিল ও গল্পের বই বিতরণ করা হয়।
পুরো অনুষ্ঠানজুড়ে ছিল শিশুদের হাসিখুশি মুখ আর উচ্ছ্বাসের আমেজ। অনুষ্ঠান শেষে অতিথিবৃন্দ শিশুদের সঙ্গে স্মৃতিচারণমূলক ছবি তোলেন ও ভবিষ্যতে আরও বৃহৎ পরিসরে শিশুদের নিয়ে এমন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দেন।
আপনার মতামত লিখুন : :