• ঢাকা
  • সোমবার, ০৭ জুলাই, ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২
Bancharampur Barta
Bongosoft Ltd.

রাজাপুরে শিক্ষার্থী ৫১ জন, শিক্ষক ৬ জন


বাঞ্ছারামপুর বার্তা | স্টাফ রিপোর্টার জুলাই ৭, ২০২৫, ১২:১০ পিএম রাজাপুরে শিক্ষার্থী ৫১ জন, শিক্ষক ৬ জন

ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলা সদরের ৯৯নং উত্তর-পূর্ব ছোট কৈবর্তখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী আছে মাত্র ছয়জন। আর এই ছয় শিক্ষার্থীকে পাঠদানের জন্য প্রতিষ্ঠানটিতে নিয়োজিত রয়েছেন পাঁচ শিক্ষক। ছয় শিক্ষার্থী আর পাঁচ শিক্ষক দিয়েই চলছে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম। এমনকি বিদ্যালয়ের ল্যাপটপও নিজের বাসায় রেখে দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয় ভবনের শ্রেণিকক্ষগুলো ফাঁকা। বিদ্যালয়ে চারজন শিক্ষক ও ছয়জন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে তৃতীয় শ্রেণিতে চারজন, চতুর্থ শ্রেণিতে একজন ও পঞ্চম শ্রেণিতে একজন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল। একটি শ্রেণিকক্ষে দেখা যায়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির দুইজন শিক্ষার্থী বসে গল্প করছে। সেখানে কোনো শিক্ষক নেই। অন্য একটি শ্রেণিকক্ষে তৃতীয় শ্রেণির চার শিক্ষার্থীর পরীক্ষা নিচ্ছিলেন একজন শিক্ষক।
দুপুর ২টা ১৫ মিনিটেও প্রাক-প্রাথমিক, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাজিরা নেওয়া হয়নি। হাজিরা খাতায় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি না থাকার কারণ জানতে চাইলে সাংবাদিকদের সামনেই নিজেদের ইচ্ছামতো হাজিরা দিতে দেখা যায় শিক্ষকদের।
বিদ্যালয়টিতে প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত কাগজ-কলমে ৫১ জন শিক্ষার্থী দেখানো হলেও স্থানীয়দের মতে প্রতিদিন গড়ে ১০-১৫ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকে। বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম থাকলেও তা চালু করেননি প্রধান শিক্ষক সাহিদা খানম। এমনকি বিদ্যালয়ের ল্যাপটপও নিজের বাসায় নিয়ে রেখেছেন।
অভিযোগ রয়েছে, শিক্ষকরা দাপ্তরিক সময় মেনে বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকেন না। যখন খুশি তখন ছুটি দিয়ে বিদ্যালয় বন্ধ করে চলে যান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক সাহিদা খানম বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানে কাগজ-কলমে ৫১ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকে। হাজিরা খাতায় প্রতিদিন হাজিরা দেওয়া হয়, আজ হয়ত কিছু খাতায় দেওয়া হয়নি। আমার একজন শিক্ষক নিয়ে সমস্যায় আছি। মাল্টিমিডিয়া পেয়েছি এক মাস হয়েছে। এখনো সেট করতে পারিনি, তাই বন্ধ। ল্যাপটপ প্রায়ই স্কুলে নিয়ে আসা হয়, তবে ঈদের ছুটির পরে নিয়ে আসা হয়নি, কারণ আমাদের মূল্যায়ন পরীক্ষা চলছে।
রাজাপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আকতার হোসেন বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলাকালীন সরকারি ল্যাপটপ অবশ্যই বিদ্যালয়ে থাকতে হবে। শিক্ষার্থীদের হাজিরা ক্লাস চলাকালীন সময়ে নিতে হবে। এছাড়া বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী উপস্থিতি কমসহ সকল অভিযোগের বিষয়ে জানতে প্রধান শিক্ষককে শোকজ করা হবে।
রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাহুল চন্দ্র বিষয়টি সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পেরে সাংবাদিকদের সামনেই উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দেন।

Side banner