ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম ফারুকের গাফিলতিতে উপজেলার কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই “বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৫” উদযাপন করা হয়নি, এমন অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের শারীরিক শিক্ষা বিভাগের উপ পরিচালক মো. শহিদুল ইসলামের নির্দেশনাকে বাঞ্ছারামপুরে উপেক্ষা করা হয়েছে। এতে পুরো উপজেলায় শিক্ষানুরাগী ও পরিবেশবিদদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ বছর পবিত্র ঈদুল আযহার ছুটি থাকায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ৫ জুনের পরিবর্তে ২৫ জুন ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৫’ পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। বর্তমান অন্তর্বতী সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা গত ২৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবসের অনুষ্ঠানমালার শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন। দিবসটিকে কেন্দ্র করে গত জুন মাসের ১ তারিখ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের ২২.০০.০০০০.০৭৪.১৫.০০২.২৫-২১৪ নং পত্রের আলোকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর তাদের আওতাধীন সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বেশ কিছু কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিপ্তরের শারীরিক শিক্ষা বিভাগের উপ পরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম গত ১৮ জুন ৩৭.০২.০০০০.১১২.৫৭.২২.১৫/৩২১৫(১০০) নং স্মারকে দিবসটি গুরুত্বের সাথে পালনের নিমিত্তে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করেন। ইতোপূর্বে ৪ জুন শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে ৫টি কর্মসূচি গ্রহণ করে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্মারক নং ৩৭.০০.০০০০.০৬২.২৩.০০১.২২-১৯১।
গৃহিত ৫টি কর্মসূচির মধ্যে (১) স্ব-স্ব শ্রেণীকক্ষ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আঙ্গিনা পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনা করা। (২) সবুজ ক্যাম্পাস বিনির্মাণে বৃক্ষরোপণ ও বৃক্ষ পরিচর্যা করা। (৩) পরিবেশ সুরক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে পরিবেশ বান্ধব সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে প্লাস্টিক ও পলিথিনের ব্যবহার কমিয়ে আনা এবং বিশ্ব পরিবেশ দিবসের গুরুত্বকে অর্থবহ করতে র্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা। (৪) একবার ব্যবহার যোগ্য প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করে পরিবেশবান্ধব সামগ্রী বা উপকরণ ব্যবহারের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করণের জন্য সেমিনারের আয়োজন করা। (৫) পরিবেশ সুরক্ষার মাধ্যমে একটি বাসযোগ্য বাংলাদেশ বিনির্মাণে শিক্ষার্থীদের করণীয় বিষয়ক বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা। অথচ বাঞ্ছারামপুরের কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই এসবের কিছুই করা হয়নি।
এ ব্যাপারে বাঞ্ছারামপুর সরকারি এস এম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষা মো. আতিকুর রহমান বলেন, পরীক্ষা ছিল তাই আমার স্কুলে পালন করা হয়নি। আজকে গাছ লাগাব।
রূপসদী বৃন্দাবন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুর মোহাম্মদ জমাদ্দার বলেন, আমার স্কুলে পরীক্ষা চলতেছে। তাই সীমিত পরিসরে পালন করা হয়েছে।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উজানচর কে এন উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর জনৈক ছাত্র জানান, এ বছর উজানচর স্কুলে বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত হয়নি।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা বলেন, যদি সরকারি নির্দেশনা থাকে, তাহলে আমি অবশ্যই খোঁজখবর নেব। মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের সাথে কথা বলবো।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শিক্ষা অফিসার মো. জুলফিকার হোসেন বলেন, আমি এখনই খোঁজখবর নিচ্ছি। সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করার কোন সুযোগ নেই।
আপনার মতামত লিখুন : :