নওগাঁয় ইয়াবা সেবনরত অবস্থ্যায় এক যুবককে আটকের পর ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে দুই পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার (ক্লোজড) করা হয়েছে। শুক্রবার (১ আগস্ট) বিকেলে পুলিশ সুপার সাফিউল সারোয়ার সই করা বিজ্ঞপ্তিতে তাদের প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়।
অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা হলেন- সদর পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) নূরুন্নবী ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) হারুন অর রশিদ।
এর আগে গত ২৬ জুলাই দুপুরে শহরের লাটাপাড়া মহল্লায় প্রকাশ্যে ইয়াবা সেবনরত অবস্থ্যায় রক্তিম (২৬) নামে এক যুবককে আটকের পর ৩৪ হাজার টাকায় রফাদফা করে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তাদের বিরুদ্ধে। পরবর্তীতে এ ঘটনা জানাজানি হলে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ২৬ জুলাই দুপুরে নওগাঁ পৌরসভার লাটাপাড়া মহল্লায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে সদর পুলিশ ফাঁড়ির একটি টিম। ওইসময়ে ইয়াবা সেবনরত অবস্থায় আটক করা হয় রক্তিমকে। শরীর তল্লাশি করে গাঁজার পাশাপাশি নগদ ৩৪ হাজার টাকা পায় পুলিশ। তাৎক্ষণিক ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক গণমাধ্যমকর্মীর হাতে ওই টাকা আমানত রাখেন রক্তিম। এরপর তাকে পুলিশ ভ্যানে উঠিয়ে নেওয়া হয় সদর পুলিশ ফাঁড়ি কালিতলায়। তবে সেখানে নেওয়ার পর ওই যুবককে গ্রেফতার না দেখিয়ে দেনদরবার শুরু করেন ফাঁড়ির এসআই নূরুন্নবী ও এএসআই হারুন অর রশিদ। একপর্যায়ে উপস্থিত ওই গণমাধ্যমকর্মীর মধ্যস্থতায় ৩৪ হাজার টাকা নেয় পুলিশ। বিনিময়ে আসামি রক্তিমকে আটকের বিষয়টি গোপন রেখে ছেড়ে দেওয়া হয়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এএসআই হারুন অর রশিদ বলেন, রক্তিমকে আটকের পর ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা দিতে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। তিনি ডোপটেস্ট ছাড়া আসামিকে সাজা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তাই পরবর্তীতে ওই যুবককে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এখানে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগটি সঠিক নয়।
এসআই নূরুন্নবীর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) খান সালমান হাবীব বলেন, গত ২৬ জুলাই কাউকে মাদকসহ আটক করে আমার কাছে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার জন্য বলেননি কালিতলা পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা। এ বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই।
সার্বিক বিষয়ে কথা হলে নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) ফারজানা হোসেন বলেন, ঘটনাটি জানার পরপরই অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্যকে ক্লোজড করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন : :