সুস্বাস্থ্যের জন্য সঠিক হজমশক্তি অপরিহার্য। হজমে সমস্যা দেখা দিলে শরীরের নানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কার্যক্ষমতা ব্যাহত হতে পারে। পুষ্টিবিদ সৈয়দা শারমিন আক্তার জানান, শোষণ প্রক্রিয়া সঠিকভাবে না হলে ওজন বেড়ে যাওয়া, ইউরিক অ্যাসিড বা গ্লুকোজের মাত্রা বৃদ্ধি, এমনকি লিপিড প্রোফাইলেও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
১। খাবারের প্রতি সতর্কতা ও পর্যবেক্ষণ
পুষ্টিবিদ ডা. তাসনিম হাসিন পাপিয়া বলেন, অনেকেই বুঝতে পারেন না কোন খাবার তাদের হজমে সমস্যা করছে। ফলে অযথা বহু খাবার তালিকা থেকে বাদ পড়ে যায়। উদাহরণস্বরূপ, ল্যাকটোজ সহ্য না হলে দুধ একেবারে বাদ না দিয়ে ধীরে ধীরে সহ্যক্ষমতা বাড়ানো যেতে পারে। কিছু ভিটামিনের ঘাটতিও হজমে প্রভাব ফেলতে পারে, যা নির্ধারিত পরীক্ষা করে জেনে নেয়া প্রয়োজন।
২। শারীরিক ব্যায়াম
সব ব্যায়াম হজমশক্তি বাড়াতে সমানভাবে কার্যকর নয়। শরীরের মধ্যাংশের উপর নির্ভর করে হজম প্রক্রিয়া। এজন্য টুইস্টিং ব্যায়াম, চেয়ারে বসে শরীর ঘোরানো, পা চক্রাকারে ঘোরানো, স্পট জগিং বা হালকা লাফানো ব্যায়াম বিশেষভাবে উপকারী।
৩। উপযুক্ত খাবার ও খাওয়ার অভ্যাস
হজম সহজ করতে কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরি, শাকসবজি রান্নায় তেল ব্যবহার করা উচিত, প্রোটিন জাতীয় খাবারের সঙ্গে লেবু খাওয়া ভালো, খাওয়ার শেষে অল্প লেবুপানি হজমে সহায়ক। খাওয়ার আগে সামান্য লবণ জিহ্বায় ছোঁয়ালে হজম প্রক্রিয়া উদ্দীপ্ত হয়। এ ছাড়া, দই বা ইয়োগার্ট শরীরের হজমবান্ধব ব্যাকটেরিয়া বাড়াতে সাহায্য করে। প্রতিদিন ১৫০-২০০ মিলিলিটার দই খাওয়া উপকারী।
৪। পর্যাপ্ত ঘুম
রাতে জেগে থাকলে শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ কমে যায়, যা হজমে বিরূপ প্রভাব ফেলে। পুষ্টিবিদরা মনে করেন, শরীরের ইন্দ্রিয়গুলো সক্রিয় থাকায় জাগ্রত অবস্থায় অক্সিজেনের চাহিদা বেড়ে যায়। তাই সঠিক হজমের জন্য রাতে নিয়মিত ও পর্যাপ্ত ঘুম অপরিহার্য।
৫। শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম
শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের কার্যকারিতা অনেকাংশেই নির্ভর করে অক্সিজেন সরবরাহের উপর। লম্বা করে নাক দিয়ে শ্বাস নিয়ে মুখ দিয়ে ধীরে ছাড়ার অভ্যাস শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়ায় এবং হজম প্রক্রিয়াকে সক্রিয় করে।
হজমশক্তি বাড়ানো নির্ভর করে সচেতন খাওয়াদাওয়া, ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম ও শ্বাস-প্রশ্বাসের সঠিক অভ্যাসের উপর। নিজের দেহের প্রতিক্রিয়া বুঝে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিলে হজমশক্তি সহজেই উন্নত করা সম্ভব।
সূত্র : বিবিসি
আপনার মতামত লিখুন : :