পঞ্চগড়ের বোদা পাইলট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাময়িকভাবে বহিষ্কৃত প্রধান শিক্ষক রবিউল আলম সাবুলের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা এবং শিক্ষকদের লাঞ্ছনার অভিযোগ উঠেছে। তাঁর বিচারের দাবি জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
সোমবার (৭ জুলাই) বিকেলে স্কুলের শিক্ষক মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ তোলা হয়। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সহকারী প্রধান শিক্ষক ও বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নার্গিস পারভীন মৌসুমী।
তিনি বলেন, দুর্নীতিবাজ রবিউল আলম সাবুল প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থাকা অবস্থায় প্রায় আড়াই কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। বিদ্যালয়ের জমি থেকে আয়, পুকুর ইজারা, ভর্তি ফি, পরীক্ষা ফি, সেশন ফি, উপবৃত্তি ও টিউশন ফিসহ সকল আয়ের টাকা প্রতিষ্ঠানের একাউন্টে জমা না দিয়ে নিজের বাসায় নিয়ে যেতেন। এছাড়া, ব্যাংকে থাকা অর্থ বিধিবহির্ভূতভাবে উত্তোলন করেন। শিক্ষক-কর্মচারীদের ভুয়ো মাস্টার রোল দেখিয়ে বেতন-ভাতা আত্মসাৎ করেছেন।
গ্রন্থাগারিক আবু তাহের বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে পারফরমেন্স বেইজড গ্রান্টস ফর সেকেন্ডারি ইনস্টিটিউশনস (পিবিজিএস) এর আওতায় পাওয়া ৫ লক্ষ টাকা সুবিধাবঞ্চিত, প্রতিবন্ধী ও অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ না করে তিনি নিজেই আত্মসাৎ করেছেন। মাস্টার রোলে স্বাক্ষর নিলেও শিক্ষার্থীদের টাকা দেননি।
সিনিয়র শিক্ষক ও উপজেলা স্কাউটের সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ নূর আলম বলেন, এই প্রতিষ্ঠানে বহু বছর ধরে নির্বাচিত কোনো গভর্নিং বডি নেই। প্রধান শিক্ষক পকেট কমিটি করে ইচ্ছেমতো স্বেচ্ছাচারিতা চালিয়েছেন। আমি প্রতিবাদ করায় আমাকে মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে, দুইবার শোকজ করা হয়েছিল।
জানা গেছে, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে একটি আন্দোলনের পর ১০ নভেম্বর রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার হন প্রধান শিক্ষক সাবুল। এরপর তদন্ত কমিটির মাধ্যমে টাকা আত্মসাতের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে এবং তাঁকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে রবিউল আলম সাবুল বলেন, যেসব শিক্ষক আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন, তাঁদের নিয়োগপত্র ও সার্টিফিকেটে ত্রুটি রয়েছে। এই বিষয়গুলো আড়াল করতে তাঁরা অপপ্রচার চালাচ্ছেন। আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। এর আগে মন্ত্রণালয়ের তদন্তেও আমার বিরুদ্ধে কোনো অনিয়ম প্রমাণ হয়নি।
আপনার মতামত লিখুন : :