দেশের শীর্ষস্থানীয় নারীভিত্তিক ম্যাগাজিন পাক্ষিক অনন্যার আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার-১৪৩২ প্রদান অনুষ্ঠান। শনিবার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডির বেঙ্গল শিল্পালয়ে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এ বছর এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন ভ্রমণবিষয়ক লেখক ও ভূপর্যটক মহুয়া রউফ।
পাক্ষিক অনন্যা ও দৈনিক ইত্তেফাকের সম্পাদক তাসমিমা হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন, ড. তানজিনা হোসেন ও কবি পিয়াস মজিদ। তারা মহুয়া রউফের লেখার ওপর আলোচনা করেন।
তাসমিমা হোসেন বলেন, এই প্রথম অনন্যা ভ্রমণবিষয়ক লেখককে পুরস্কৃত করলো। বাংলাদেশে নারীদের মধ্যে খুব কম এমন লেখিকা পাওয়া যাবে। ভ্রমণের মধ্যে মহুয়া নতুন আঙ্গিক এনেছে। কীভাবে একটা লেখাকে শিক্ষণীয় করা যায় তা মহুয়া রউফের লেখা পড়লে বোঝা যায়। তার লেখনিতে ভাষাশৈলী ও গরীর জ্ঞান দারুণভাবে উঠে এসেছে।
বক্তারা বলেন, মহুয়া রউফ তার প্রথম বই ‘দখিন দুয়ার খোলা’-তে অ্যান্টার্কটিকার দুর্গম অভিযাত্রার রোমাঞ্চকে তুলে এনেছেন নতুন দৃষ্টিতে।
দ্বিতীয় বই ‘লাতিনের নাটাই’ পাঠককে নিয়ে গেছে মায়া-ইনকা সভ্যতার বিস্ময়, নেরুদার কবিতার সুর আর লাতিন সংস্কৃতির প্রাণচাঞ্চল্যের ভেতরে।
তার ভ্রমণগদ্য মানুষের জীবন, ইতিহাস, প্রকৃতি আর স্মৃতির ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া এক নবতর আলোকরেখা। এভাবে তিনি বাংলা ভ্রমণসাহিত্যকে দিয়েছেন কৌতূহলোদ্দীপক ভিন্নতর বৈশিষ্ট্য।
বক্তারা আরও বলেন, মহুয়া রউফ গবেষক হিসেবে বহু দিনে ধরে অনুসন্ধিৎসু মন নিয়ে ছুটে গেছেন পৃথিবীর দূরতম বিচিত্র অঞ্চলে। আর সেই পথচলার মধ্যেই জন্ম নিয়েছে তার লেখকসত্তা। একাকী ভ্রমণ তার কাছে শুধু স্বাধীনতার অনুশীলন নয়-এ এক অপার আত্মবিশ্বাস। ইউরোপের ব্যস্ত নগরী থেকে লাতিন আমেরিকার উন্মাতাল সংস্কৃতি, আবার সোজা পৃথিবীর সর্বদক্ষিণের বরফমহাদেশ অ্যান্টার্কটিকা-সবখানেই তিনি বিচরণ করেছেন।
এর আগে অনুষ্ঠানে পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখকের ওপর তাপস কুমার দত্ত নির্মিত তথ্যচিত্র দেখানো হয়। এরপর তাকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন অনন্যা সম্পাদক তাসমিমা হোসেন। পরে তাকে ক্রেস্ট তুলে দেন অতিথিরা।
সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য নারী সাহিত্যিকদের ১৯৯৩ সাল (বাংলা ১৪০১) থেকে ৩২ বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন : :