• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৮ জুলাই, ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২
Bancharampur Barta
Bongosoft Ltd.

চতুল ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ঘুষ ছাড়া মেলে না সেবা


বাঞ্ছারামপুর বার্তা | স্টাফ রিপোর্টার জুলাই ১৭, ২০২৫, ০৮:১৮ পিএম চতুল ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ঘুষ ছাড়া মেলে না সেবা

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার চতুল ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ঘুষ ছাড়া মেলে না কোনো সেবা। অতিরিক্ত অর্থ না দিলে দিনের পর দিন অফিসের বারান্দায় ঘুরতে হয় সেবাপ্রত্যাশীদের। জমির নামজারি, খতিয়ান দেখানো, তদন্ত প্রতিবেদন কিংবা খাজনা আদায় টাকা না দিলে কাজ হয় না বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। 
বুধবার সরেজমিন দেখা যায়, ভূমি অফিসের চারপাশে রয়েছে কয়েকটি কম্পিউটারের দোকান। অনলাইনে ভূমির নথিসংশ্লিষ্ট কাজ সম্পন্ন করা হয় এ দোকানগুলোতে। এ সব দোকান থেকেই ‘মক্কেল’ ধরে নিয়ে যাওয়া হয় তহশিলদার জহিরুল হকের কাছে। এই দালালদের প্রধান পছন্দ থাকে প্রবাসীরা। 
তহশিল অফিসের সামনে কথা হয় জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য আহসান হাবিব, বাইখীর গ্রামের বাসিন্দা নিয়ামুল হক ও মিলন শেখের সঙ্গে। তাদের ভাষ্য, ভূমি অফিসে অতিরিক্ত অর্থ ছাড়া কোনো ফাইল এসিল্যান্ড অফিসে যায় না। তাদের কোনো মিউটেশন ৪/৫ হাজার টাকার কমে কাজ সম্পন্ন হয়নি। যেখানে একটি মিউটেশনের সরকারি চার্জ এক হাজার ১৭০ টাকা। শুধু চতুল তহশিল অফিস নয়, এমন চিত্র পুরো বোয়ালমারী ইউনিয়ন ভূমি অফিস জুড়ে।
সেবাগ্রহীতাদের অভিযোগ, তহশিলদার জহিরুল হক নিজের নিয়ন্ত্রণে কয়েকজন দালাল রেখে সেবাগ্রহীতাদের সঙ্গে কথা বলান। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তিনি নিজেই অফিসের খরচের কথা বলে অতিরিক্ত অর্থ নেন।
ভুক্তভোগী শামিমা ইয়াসমিন বলেন, শিগগিরই তিনি ইতালিতে ফিরে যাবেন। যে কারণে চতুল ইউনিয়নের একটি জমির মিউটেশন খুবই জরুরি ছিল। বাইরের দোকান থেকে অনলাইনে আবেদন করে প্রয়োজনীয় সব কাজপত্র নিয়ে তিনি ভূমি অফিসে যান। অতিরিক্ত অর্থ ছাড়া সেখান থেকে এসিল্যান্ড অফিসে ফাইল ফরওয়ার্ড দেওয়া হচ্ছিল না। পরে ভাইকে দিয়ে এক হাজার টাকা পাঠালে ফাইল ফরোয়ার্ড দেওয়া হয়। 
এহরামুজ্জামান নামে অপর এক ভুক্তভোগী জানান, বাবার নামে রেকর্ডীয় সম্পত্তি নামজারি করার জন্য চতুল ভূমি অফিসে গিয়েছিলেন। ৩-৪ কার্যদিবস সেখানে যাওয়ার পর তহশিলদার তাঁর কাছে অফিস খরচের কথা বলে অতিরিক্ত অর্থ দাবি করেন। বাধ্য হয়ে তাঁকে বাড়তি অর্থ দিতে হয়েছে। 
চতুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, তাঁর ইউনিয়নের অনেকের কাছ থেকেই তহশিলদার সম্পর্কে নানা রকম খবর পেয়েছেন। তবে জমিসংক্রান্ত কাজে তিনি নিজে কখনও তহশিলদারের কাছে যাননি। 
অতিরিক্ত অর্থ নেওয়ার কথা অস্বীকার করে চতুল ইউনিয়নের তহশিলদার জহিরুল হক বলেন, কেউ (সেবাগ্রহীতা) খুশি হয়ে কিছু (অর্থ) দিলে নিয়ে থাকেন; তবে কাউকে জিম্মি করে নয়। 
ফরিদপুর সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি অধ্যাপক শিপ্রা রায় বলেন, সরকার যেভাবে সংস্কারের মাধ্যমে মানুষের সেবা নিশ্চিত করতে চায়, তৃণমূল পর্যায়ে এলে সেই মেসেজটি এখনও সেভাবে পৌঁছায়নি। যে কারণেই শত চেষ্টার ফলেও হয়রানি রোধ করা যাচ্ছে না। 
বোয়ালমারীর এসিল্যান্ড আব্দুল্লাহ আল আমিন বলেন, অনলাইন সার্ভিস চালু হওয়ার ফলে অনেক ক্ষেত্রে দুর্নীতি কমেছে। তবে অনেকেই এ বিষয়টি ভালোভাবে না বুঝতে পারায় দালালের খপ্পরে পড়ে।

Side banner