ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ছলিমাবাদ ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ঘুষ ছাড়া কাজ হয় না। সেবা নিতে সেখানে পদে পদে ঘুষ দিতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন একাধিক সেবাপ্রার্থী। ঘুষ দিতে না চাইলে গালিগালাজ এমনকি হুমকিও দেয়া হয়।
ছলিমাবাদে বর্তমানে ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন মো. হেলালউদ্দিন। ২০২৩ সালের ৬ আগস্ট তিনি ছলিমাবাদে যোগদান করেন। তিনি যোগদানের পর থেকেই পুরো অফিসটিকেই ঘুষের আখড়ায় পরিণত করেছেন।
সেবাপ্রত্যাশী ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তা মো. হেলাল উদ্দিনের নেতৃত্বেই চলছে ঘুষ বাণিজ্য। প্রতিবাদ করলে গালিগালাজ এমনকি হুমকি-ধমকিও দেয়া হয়।
২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগে কথায় কথায় তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাবেক এমপি রবিউল মোক্তাদির ও স্থানীয় এমপি ক্যাপ্টেন এ বি তাজুল ইসলাম সহ বড় বড় নেতাদের কাছের মানুষ হিসেবেও নিজেকে গর্বের সাথে পরিচয় দিতেন। বলতে গেলে ওই সময় কট্টরপন্থী আওয়ামী লীগার হিসেবে সেবাপ্রার্থীদের ধমক দিয়ে কথা বলতেন। যদিও ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে রাতারাতি বদলে যান। তবে ঘুষ না পেলে একটি ফাইলও ছাড়েন না। শুধু তাই নয়, একজনের জমি আরেকজনকে খারিজ দিয়ে চেক কাটেন এবং সংশোধনের নামে আবারও মোটা অংকের টাকা দাবি করে থাকেন, এমন অভিযোগও পাওয়া যায়।
ছলিমাবাদের সহকারী কর্মকর্তার কাছে নানাভাবে জিম্মি হয়ে আছে সাধারণ মানুষ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক ভুক্তভোগী সেবাপ্রার্থী অভিযোগ করেন, একটি জমি তার পূর্বপুরুষ থেকে ভোগ-দখলে আছে। সমস্ত খতিয়ানেও তার পূর্বপুরুষদের নাম উল্লেখ আছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় ছলিমাবাদ ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা টাকার বিনিময়ে অন্যজনকে খারিজ করে দেন। তিনি অবগত হয়ে প্রতিবাদ জানালে সংশোধনের নামে টাকা দাবি করেন ভূমি কর্মকর্তা। উপায় না পেয়ে তিনি তার প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান। অথচ টাকা দেয়ার পরও তার কাজ হচ্ছে না। আজকাল করে তাকে হয়রানি করছেন ভূমি অফিসের লোকজন। বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও তিনি খারিজ পাননি।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, অবৈধ খারিজ বাতিলের জন্য সাড়ে ৫ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন ভূমি অফিসার। আবার সরেজমিন পরিদর্শনের জন্য নায়েবকে যাতায়াত খরচ বাবদ ১ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। এছাড়া তার সহকারীকে ৫শত টাকাও দেয়া হয়েছে। পরে আবার খতিয়ানের তথ্য জানতে গিয়ে অতিরিক্ত ৫০০ টাকা গুনতে হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই করেননি তারা।
আরেক ভুক্তভোগী বলেন, কিছুদিন আগে আমি একটা খতিয়ানের বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলে আমার কাছে এক হাজার টাকা দাবি করেন ভূমি অফিসার হেলাল উদ্দিন। কয়েকদিন অফিসে ধর্না দিয়ে কাজ না হওয়ায় পরে টাকা দিতে বাধ্য হয়েছি। তারপরও আমার পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া খতিয়ানের সঠিক তথ্য দেননি তারা।
সেবাপ্রত্যাশীরা উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
আপনার মতামত লিখুন : :