ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে মাছের ঘেরকে কেন্দ্র করে রাহাত আলী শাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক জসিম উদ্দিন ও তার দুই ছেলেকে বেধড়ক পিটিয়ে ও মাথায় কুপিয়ে গুরুতর জখম করে আহত করেছে জাকির মিয়া ও তার নেতৃত্বের একদল বাহিনী। আহত দুজন হলো জসিম উদ্দিনের বড় ছেলে এনামুল হক ইমন ও ছোট ছেলে আলভী।
এ ঘটনায় বাঞ্ছারামপুর মডেল থানায় মামলা করা হলেও আসামীরা ধরা ছোয়ার বাইরে থেকে মামলা উঠিয়ে নেওয়ার জন্য জসিম উদ্দিন ও তার পরিবারকে নানাভাবে চাপ দিয়ে যাচ্ছে। ঘটনাটি ঘটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার দড়িয়াদৌলত ইউনিয়নের কালাইনগর গ্রামে।
এ বিষয়ে জসিম উদ্দিন বলেন, আমি দীর্ঘ ২০ বছর যাবত তার বোরো জমিন সংলগ্ন তিতাস নদীর কিছু অংশে মাছের ঘের তৈরি করে মাছ ধরে আসছেন। হঠাৎ কয়েক মাস পূর্বে এই ঘেরের জন্য তার থেকে চাঁদা দাবী করে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আমাকে বিভিন্ন সময় নানা রকম হুমকী প্রদান করে।
গত ১ অক্টোবর সন্ধায় আমি মাছের ঘেরে কাজ করতে গেলে সেখানে কয়েকজন নানা অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে ও মেরে ফেলার হুমকী প্রদান করে। এরপর সেদিন রাত আনুমানিক ১২ টায় কালাইনগর গ্রামের জাকিরের নেতৃত্বে ১৫-২০ জনের একদল বাহিনী নিয়ে আমার বাড়িতে এসে আমাকে ঘর থেকে বের করে এলোপাতাড়ি ও বেধড়ক মারতে থাকে ও রামদা দিয়ে মাথায় গুরুতর জখম করে। আমার চিৎকারে বড় ছেলে এনামুল হক ইমন এবং ছোট ছেলে আলভী ঘর থেকে বের হয়ে আসলে তাদেরকেও রামদা ও চাইনিজ কুড়াল দিয়ে মাথায় কোপ দিয়ে গুরুতর জখম করে। এরপর শোর চিৎকারে পার্শ্ববর্তী প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে জাকির ও তার বাহিনীরা দৌড়ে পালিয়ে যায়।
এ সময় প্রতিবেশীরা আমাদেরকে উদ্ধার করে তাৎক্ষণিক বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে আমার ছোট ছেলে আলভীর অবস্থা আশঙ্কা জনক হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।
তিনি আরো বলেন, জাকির ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী আমার বাড়ি ঘরের বিভিন্ন মালামাল স্বর্ণালংকার টাকা পয়সা সহ প্রায় ৬-৭ লক্ষ টাকার মালামাল নিয়ে যায়। আমি এ ঘটনায় বাঞ্ছারামপুর মডেল থানায় একটি মামলা করি। মামলা ৯ অক্টোবর এফআইআর হলেও পুলিশ আসামীদেরকে গ্রেফতার করেছে না। আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরেফিরে আমাকে মামলা উঠিয়ে নিতে নানা রকম ভাবে হুমকি দিচ্ছে। যদি মামলা না তুলি তাহলে আমাকে ও আমার পরিবারকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকী দিচ্ছে। এই মুহুর্তে আমি ও আমার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছি।
এ ঘটনায় জসিম উদ্দিন বাদী হয়ে ১১ জনকে আসামী করে বাঞ্ছারামপুর মডেল থানায় একটি মামলা করেন। মামলার আসামিরা হলো- দরিয়াদৌলত ইউনিয়নের কালাইনগর গ্রামের জাকির মিয়া (৫০), জহিরুল ইসলাম (২৫), শ্রাবণ (২০), রুবেল (৩০), আনার হোসেন (৪৫), জীবন মিয়া (১৯), রিপন মিয়া (৫০), তোফায়েল হোসেন (২৪), হৃদয় মিয়া (২০), রফিকুল ইসলাম (৪০), কাইয়ুম মিয়া (২৫)।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত জাকির হোসেন বলেন, আমি এ ঘটনায় জড়িত না। আমাদেরকে ফাঁসানো হচ্ছে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হচ্ছে। ছেলেদের মধ্যে কিছুটা গন্ডগোল হয়েছে তারপর আমরা তা বাধা দিয়েছি। জসীমউদ্দীন মাস্টার আমাদের আত্মীয় হয় কেন আমি মারধর করব। আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে আমরা বাড়িছাড়া।
এ দিকে বাঞ্ছারামপুর থানার উপ-পরিদর্শক মো. হাসান মুঠোফোনে বলেন, আমরা গ্রেফতারের জন্য অনেকবার চেষ্টা করেছি, মামলা হওয়ার পর আসামিরা পলাতক। আমি ছুটিতে আছি এসে গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
আপনার মতামত লিখুন : :