থিম পার্ক হলো এমন একটি বিনোদনকেন্দ্র, যেখানে নির্দিষ্ট একটি বিষয় বা গল্পকে ঘিরে তৈরি করা হয় রাইড, শো এবং সাজসজ্জা। পরিবার, বন্ধু বা একা—সব ধরনের দর্শনার্থী এসব পার্ক থেকে নানা ধরনের অভিজ্ঞতা নিতে পারেন। বিশ্বজুড়ে বিনোদন, রোমাঞ্চ ও কল্পনার মিশেলে তৈরি পার্কগুলো পরিবার, পর্যটক ও কল্পনাবিলাসীদের কাছে জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। এ খাতে ডিজনি এককভাবে রাজত্ব ধরে রেখেছে। থিমড এন্টারটেইনমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (টিইএ) এবং এইসিওএমের তথ্যের আলোকে, ২০২৩-২৪ সালভিত্তিক বিশ্বের শীর্ষ ১০ থিম পার্কের খুঁটিনাটি তুলে ধরা হলো।
১। ডিজনি ম্যাজিক কিংডম
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের অরল্যান্ডোতে অবস্থিত ডিজনির ম্যাজিক কিংডম অবস্থিত। ২০২৩-২৪ সালে এই থিম পার্কে ১ কোটি ৭৭ লাখ দর্শনার্থী এসেছিলেন। ওয়াল্ট ডিজনি ওয়ার্ল্ড রিসোর্টের অংশ হিসেবে এখানে আছে আইকনিক সিন্ডরেলা ক্যাসেল, প্যারেড, রাইড এবং রাতের আতশবাজির আয়োজন। ১৯৭১ সালের ১ অক্টোবর এটি দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
২। ডিজনিল্যান্ড পার্ক
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যানাহেইমে অবস্থিত ডিজনিল্যান্ড পার্ক ২০২৩-২৪ সালে ১ কোটি ৭৩ লাখ দর্শনার্থী পেয়েছে। এটি ১৯৫৫ সালে উদ্বোধন হওয়া বিশ্বের প্রথম ডিজনি থিম পার্ক। এখানে আছে ক্ল্যাসিক ডিজনি রাইড, শো এবং চরিত্রভিত্তিক নানা বিনোদনের ব্যবস্থা। ৪০ হেক্টর জায়গা নিয়ে বানানো হয় এই পার্ক। ১৯৫৫ সালের ১৭ জুলাই এটি উদ্বোধন করা হয়।
৩। ইউনিভার্সাল স্টুডিওস জাপান
জাপানের ওসাকায় অবস্থিত এই পার্কে ২০২৩-২৪ সালে ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ বেড়াতে গেছেন। এখানে রয়েছে ‘হ্যারি পটার’, ‘জুরাসিক পার্ক’ ও ‘সুপার নিন্টেন্ডো ওয়ার্ল্ড’ এর মতো জনপ্রিয় থিমভিত্তিক রাইড ও শো। ৫৫ হেক্টর জায়গাজুড়ে এই পার্ক গড়ে তোলা হয়েছে। ২০০১ সালের ১৩ মার্চ এটি দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।
৪। টোকিও ডিজনিল্যান্ড
জাপানের টোকিওতে অবস্থিত এই পার্কে ২০২৩-২৪ সালে ১ কোটি ৫১ লাখ দর্শনার্থী গিয়েছিলেন। এটি এশিয়ার প্রথম ডিজনি থিম পার্ক। ১১৫ একর জায়গায় অবস্থিত এই পার্কের উদ্বোধন করা হয়েছে ১৯৮৩ সালের ১৫ এপ্রিল।
৫। সাংহাই ডিজনিল্যান্ড
চীনের সাংহাই শহরে অবস্থিত এই পার্কে ২০২৩-২৪ সালে ১ কোটি ৪০ লাখ দর্শনার্থী এসেছে। আধুনিক ডিজাইন ও স্থানীয় সংস্কৃতির মিশ্রণে এই থিম পার্ক তৈরি করা হয়েছে। এখানে আছে ‘ট্রন লাইটসাইকেল রান’-এর মতো আধুনিক রাইড। ২০১৬ সালের ১৬ জুন এই পার্ক উদ্বোধন করা হয়।
৬। চিমেলং ওশান কিংডম
চীনের ঝুহাই শহরের চিমেলং ওশান কিংডম নামের এই থিম পার্ক অবস্থিত। ২০২৩-২৪ সালে এখানে দর্শনার্থীর সংখ্যা ছিল ১ কোটি ২৫ লাখ। এটি সামুদ্রিক প্রাণী ভিত্তিক থিম পার্ক, যেখানে আছে বিশাল অ্যাকুয়ারিয়াম, ডলফিন ও তিমি শো এবং পানির রোলার কোস্টার। প্রায় ২১ বর্গকিলোমিটার এলাকায় বিস্তৃত এই পার্ক দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় ২০১৪ সালের ২৯ মার্চ।
৭। টোকিও ডিজনি সি
জাপানের টোকিওতে অবস্থিত ডিজনি সি থিম পার্ক। ২০২৩-২৪ সালে এখানে ১ কোটি ২৪ লাখ দর্শনার্থী এসেছে। সামুদ্রিক অভিযানের থিমে তৈরি এই পার্কে আছে ‘মিসট্রিয়াস আইল্যান্ড’ ও ‘আমেরিকান ওয়াটারফ্রন্ট’-এর মতো আকর্ষণীয় এলাকা। ৪৯ হেক্টর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত এই পার্ক চালু করা হয় ২০০১ সালের ৪ সেপ্টেম্বর।
৮। ইপকট
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার অরল্যান্ডোতে অবস্থিত ইপকট পার্কে ২০২৩-২৪ সালে ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ গেছেন। পার্কটি ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি ও বিশ্ব সংস্কৃতি নিয়ে গড়ে উঠেছে। ১২১ হেক্টর জায়গাজুড়ে অবস্থিত এই পার্ক চালু করা হয় ১৯৮২ সালের ১ অক্টোবর।
৯। ডিজনিল্যান্ড প্যারিস
ডিজনিল্যান্ড প্যারিস ফ্রান্সের মার্ন-লা-ভ্যালেতে অবস্থিত। এই থিম পার্কে ২০২৩-২৪ সালে ১ কোটি ৪ লাখ দর্শনার্থী গেছেন। ইউরোপের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই থিম পার্কে রয়েছে ডিজনির রাইড, নানা চমকপ্রদ শো ও ইউরোপীয় স্থাপত্যের মিশ্রণ। ২২ দশমিক ৩ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে অবস্থিত এই পার্ক চালু করা হয় ১৯৯২ সালের ১২ এপ্রিল।
১০। ডিজনি হলিউড স্টুডিওস
যুক্তরাষ্ট্রের অরল্যান্ডোতে অবস্থিত এই পার্কে ২০২৩-২৪ সালে ১ কোটি ৩ লাখ দর্শনার্থী ভিড় করেছেন। সিনেমা ও টিভি থিমে গড়া এই পার্কে আছে স্টার ওয়ার্স, টয় স্টোরি সিনেমার থিমে তৈরি রাইড ও রক অ্যান্ড রোলার কোস্টার। ৫৫ হেক্টর জায়গাজুড়ে অবস্থিত এই পার্ক চালু করা হয় ১৯৮৯ সালের ১ মে।
আপনার মতামত লিখুন : :