• ঢাকা
  • বুধবার, ১৩ আগস্ট, ২০২৫, ২৯ শ্রাবণ ১৪৩২
Bancharampur Barta
Bongosoft Ltd.

ফুলবাড়ীতে ৬ বছরের শিশুকে পুকুরে ছুড়ে ফেললেন সৎবাবা


বাঞ্ছারামপুর বার্তা | স্টাফ রিপোর্টার আগস্ট ১০, ২০২৫, ১২:২৮ পিএম ফুলবাড়ীতে ৬ বছরের শিশুকে পুকুরে ছুড়ে ফেললেন সৎবাবা

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ছয় বছরের শিশু তাসিন ইসলাম (৬)-কে রাতের অন্ধকারে পুকুরের পানিতে ফেলে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সৎবাবা মুরাদ হোসেনকে (৪৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার (৯ আগস্ট) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের ছড়ারপার গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই শিশুকে পুকুরে ছুড়ে ফেলার সময় এক পথচারী ঘটনাটি টের পেয়ে দ্রুত পুকুরে নেমে তাকে উদ্ধার করেন। পরে রাত ১০টার দিকে ফুলবাড়ী থানার পুলিশ এসে শিশুটিকে থানায় নিয়ে যায়।
এদিকে, পালিয়ে যাওয়ার সময় লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট এলাকায় স্থানীয়রা মুরাদকে আটক করে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন।
শিশু তাসিন ইসলাম লালমনিরহাট সদর উপজেলার শখের বাজার এলাকার মৃত তারা মিয়ার ছেলে। গ্রেপ্তার মুরাদ হোসেন একই উপজেলার সাপ্টানা গ্রামের আকবর আলীর ছেলে ও ওই শিশুর সৎবাবা।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গতকাল শনিবার সারা দিন তাসিনকে বাইসাইকেলে ঘুরিয়ে বেড়ানোর পর রাত সাড়ে ৮টার দিকে ছড়ারপার এলাকার একটি পুকুরে ফেলে দেন মুরাদ হোসেন। এরপর দ্রুত সেখান থেকে পালিয়ে যান। এ সময় পথচারী আজিপুর রহমান শিশুটির চিৎকার শুনে পুকুরপাড়ে ছুটে যান। শিশুটি তখন পানিতে ডুবে যাচ্ছিল। তিনি দ্রুত পানিতে নেমে তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন।
স্থানীয় রাজ্জাক, স্বপন চন্দ্র ও সাকু মিয়াসহ অনেকেই জানান, যদি পথচারী আজিপুর ইসলাম সঙ্গে সঙ্গে না দেখতেন শিশুটিকে বাঁচানো সম্ভব হত না। বাবা হয়ে এরকম নিষ্ঠুর কাজ যে করতে পারে তার কঠিন শাস্তি হওয়া উচিত।
পথচারী আজিপুর রহমান বলেন, আমি বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলাম। হঠাৎ দেখি, এক ব্যক্তি শিশুটিকে পুকুরে ফেলে দিয়ে সাইকেল চালিয়ে দ্রুত চলে যাচ্ছেন। শিশুটি তখন ‘বাঁচাও, বাঁচাও’ বলে চিৎকার করছিল। আমি আর দেরি না করে পানিতে নেমে তাকে উদ্ধার করি। এই নিষ্পাপ শিশুটি কি এমন দোষ, তাকে পানিতে ফেলে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছে। আমি ওই পাষণ্ড বাবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
শিশুটির বড় ভাই বিপ্লব মিয়া (২২) জানান, তাদের বাবা মারা যাওয়ার পর ছোট ভাইকে নিয়ে মা ববিতা বেগম নানার বাড়িতে থাকতেন। প্রায় সাত মাস আগে মায়ের সঙ্গে মুরাদ হোসেনের বিয়ে হয়। এরপর থেকে তাসিন মায়ের সঙ্গে সৎবাবার ঘরে থাকত। আমার ছোট ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার চেষ্টা করায় শনিবার রাতে ফুলবাড়ী থানায় মামলা করেছি।
শিশু তাসিনের মা ববিতা বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি আমার আমার নরপশু স্বামীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
ফুলবাড়ী থানার ওসি এসআই আব্দুর রহিম বলেন, শিশুটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, মুরাদের স্ত্রী ববিতা বেগম তার ছেলে তাসিনকে নিয়ে সংসার করলেও তিনি তাকে মেনে নিতে পারছিলেন না। শিশুটিকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা থেকেই তিনি পুকুরে ফেলে হত্যার চেষ্টা করেছেন। এ ব্যাপারে থানায় একটি হত্যার চেষ্টা মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেপ্তার আসামিকে কুড়িগ্রাম আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।