জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তিতে রাষ্ট্রীয় উদযাপন বাদ দিয়ে শীর্ষস্থানীয় পাঁচ নেতার কক্সবাজার ‘ভ্রমণ’ এবং তাদের সঙ্গে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে জড়িয়ে আলোচনায় অস্বস্তিতে পড়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি। অভ্যুত্থানের গর্ভে জন্ম নেওয়া এ দলের কেউ কেউ মনে করছেন, পাঁচ নেতা যে কাজেই কক্সবাজারে গিয়ে থাকুক না কেন, তা দলের মধ্যে এক ধরনের সন্দেহও তৈরি করেছে।
কাউকে না জানিয়ে এমন ‘গুরুত্বপূর্ণ দিবসে’ ঢাকার বাইরে যাওয়ায় এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ, তার স্ত্রী এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ এবং মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরউদ্দীন পাটওয়ারীকে শোকজ করেছে দলটি।
জ্যেষ্ঠ নেতাদের কেউ কেউ বলছেন, দলে যত বড় পদই থাক, যত জনপ্রিয়ই হোক, ‘আচরণগত ত্রুটি’ থাকলে ছাড় দেওয়া হবে না।
মঙ্গলবার দুপুরের দিকে কয়েকটি টেলিভিশনে খবর রটে, কক্সবাজারে গিয়ে পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন এনসিপির পাঁচ নেতা। পরে বৈঠকের কথা অস্বীকার করে খালেদ সাইফুল্লাহ ও নাসীরউদ্দীন পাটওয়ারী সাংবাদিকদের বলেন, তারা কক্সবাজারে গেছেন ‘ঘুরতে’, বৈঠকের বিষয়টি ‘সত্য নয়’।
এদিকে ওই খবর প্রচার হওয়ার পর সারজিস-হাসনাতদের হোটেলের বাইরে বিক্ষোভ করে স্থানীয় বিএনপি। বিমানবন্দর হয়ে তাদের গমনাগমন, হোটেলে ঘোরাফেরার একাধিক ভিডিও আসতে থাকে সোশাল মিডিয়ায়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বুধবার সন্ধ্যার পরও ওই পাঁচজন কক্সবাজারে ছিলেন। তবে তারা ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে দলের কেউ কেউ বলেছেন। মোবাইলে ফোন করা হলে পাঁচ নেতার কেউ কক্সবাজারে অবস্থানের কারণ বা সার্বিক বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাননি।
তাদের মধ্যে খালেদ সাইফুল্লাহ বলেছেন, কক্সবাজারে অবস্থানের মত ব্যক্তিগত কোনো কাজের তথ্য তিনি গণমাধ্যমকে দেবেন না।
দলের এক নেতার মাধ্যমে নাসীরউদ্দীন পাটওয়ারীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আগামী দুই দিন তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করবেন না। তবে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেছেন, যত বড় নেতাই হোক, যত জনপ্রিয় নেতাই হোক, তার আচরণগত কোনো ত্রুটি হলে আমরা ছাড় দেব না। এদের ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে। আমরা কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছি। উত্তর পাওয়ার পর এ বিষয়ে বাকি মন্তব্য করা যাবে।
আলোচিত এ পাঁচ নেতার ব্যক্তিগত চলাফেরার ভিডিও গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার প্রসঙ্গ ধরে সামান্তা বলেন, অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়, এ ধরনের কাজে (ভিডিও ছড়ানো) সাধারণত গোয়েন্দা সংস্থাই যুক্ত থাকে। এক্ষেত্রে কারা যুক্ত আছেন, সেটা একটা রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের পক্ষে তদন্ত করে বলা সম্ভব নয়, আমরা ধারণা করতে পারি। তবে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, মিডিয়া ট্রায়াল ও নজরদারিকে এমন মাত্রায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে যে, কেউ একটু চলাফেরা করতে পারছে না। কারো সঙ্গে বৈঠক করার প্রয়োজন হলেও সেটাকে একটা ফ্রেমিং করে উপস্থাপন করা হচ্ছে।
এ ঘটনায় আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে সামন্তা বলেন, আমাদের নারী নেত্রী তাসনিম জারাকে বুলিং করে নানা ধরনের কন্টেন্ট ছড়ানো হচ্ছে। এ বিষয়ে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া যায়, আমরা সেটা চিন্তা করছি।
সংগঠনের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ বলছেন, ঘটনা কী ঘটেছে, সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। দলের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে মন্তব্য করতে নিষেধ রয়েছে। তাদেরকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছে। নোটিসের জবাব হাতে আসার পর মন্তব্য করা যাবে।
এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আরিফুর রহমান তুহিন মনে করেন, নেতাকর্মীদের ‘চরিত্র হননের ধারাবাহিক প্রচেষ্টার’ অংশ হিসেবে কক্সবাজারে পাঁচ নেতার চলাফেরার একের পর এক ভিডিও প্রকাশ করা হচ্ছে।
একটি টেলিভিশনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, বিএনপি পরিবারের মালিকানাধীন টেলিভিশন চ্যানেল থেকে সর্বপ্রথম পিটার হাসকে ইস্যু করে একটি খবর প্রকাশ করা হয়েছে, যার কোনো ভিত্তি নেই। আওয়ামী লীগের সময় এ সংবাদমাধ্যম ব্যবহার করে বিএনপির চরিত্র হনন করা হত। এখন বিএনপিও তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের চরিত্র হনন শুরু করেছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো থেকেই এ ধরনের ফুটেজ প্রচার করা হচ্ছে বলে আমাদের ধারণা।
এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৫ জনের বেশি নেতাকে জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু অধিকাংশই অনুষ্ঠানে যাননি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বর্তমান সভাপতি রিফাত রশিদ, এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেনসহ হাতে গোনা কয়েকজন নেতাকে অনুষ্ঠানে দেখা গেছে। দলের কারো কারো মতে, জুলাই ঘোষণাপত্রের শব্দ ও পরিভাষা নিয়ে এনসিপির সঙ্গে সরকারের এক ধরনের মতবিরোধ শুরু হয়েছে। আর এ কারণেই শীর্ষস্থানীয় পাঁচ নেতা অনুষ্ঠানে যোগ দেননি।
মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার মানিক মিয়া এভিনিউয়ে যখন জুলাই অভ্যুত্থানের রাষ্ট্রীয় উদযাপন চলছিল, তখনই খবর আসে, এনসিপির পাঁচ শীর্ষ নেতা কক্সবাজারে গেছেন। কক্সবাজার এয়ারপোর্টে কর্মরত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একজন কর্মী বলেন, বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে এনসিপি নেতারা কক্সবাজারে পৌঁছান। এরপর তারা গাড়িতে করে বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে যান।
সংবাদমাধ্যমে খবরের বলা হয়, দুপুরের দিকে একটি হোটেলে তারা সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক করছেন বলে কক্সবাজারে খবর ছড়িয়ে পড়ে। পিটার হাস মার্কিন রাষ্ট্রদূত হয়ে বাংলাদেশে আসেন ২০২২ সালের মার্চে। দায়িত্ব শেষে ঢাকা ছাড়েন ২০২৪ সালের জুলাইয়ে, যখন দেশে সরকারবিরোধী আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ২৩ জুলাই রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে এক পোস্টে তিনি বলেন, বাংলাদেশে এভাবে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব শেষ করতে হবে, ভাবিনি।
কূটনীতিক হিসেবে ঢাকাই ছিল পিটার হাসের শেষ কর্মস্থল। অবসরে যাওয়ার পর বহুজাতিক জ্বালানি কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জিতে উপদেষ্টার চাকরি নেন তিনি। সেই চাকরির সুবাদে দু-একবার ঢাকায় আসার-যাওয়ার সুযোগ হয় তার। তবে মঙ্গলবার তিনি বাংলাদেশে ছিলেন কিনা, সে বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও কক্সবাজার বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, এদিন পিটার হাসের বাংলাদেশে থাকার কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই। এরমধ্যে মঙ্গলবার সামাজিক মাধ্যমে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) দোলনচাঁপা ভিআইপি-২ লাউঞ্জ ব্যবহারকারীদের একটি কথিত তালিকা ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে দাবি করা হয়, পিটার হাস হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ওই ভিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহার করেছেন। তবে ‘ফ্যাক্ট চেক’ সংস্থা রিউমার স্ক্যানার বলছে, বেবিচকের নামে ছড়ানো ওই তালিকা ভুয়া।
একাধিক সংবাদমাধ্যম নিজস্ব সূত্রের বরাতে দাবি করেছে, পিটার হাস বর্তমানে বাংলাদেশে নেই, তিনি অবস্থান করছেন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে।
পিটার হাসের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য হোক, কিংবা বেড়ানোর জন্যই হোক, জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসে পাঁচ নেতার কক্সবাজারে যাওয়ার ঘটনা এনসিপির কারো কারো মধ্যেও সন্দেহ তৈরি করেছে।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে শীর্ষস্থানীয় এক নেতা বলেন, পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠকের খবরটি সত্য হোক আর মিথ্যা হোক, গোয়েন্দা সংস্থা হোক আর গণমাধ্যম হোক, খবরে না এলে আমরা জানতামই না যে তারা কক্সবাজার অবস্থান করছেন। সুতরাং তাদের চলাফেরার মধ্যে সন্দেহ করার মত কিছু আছে। পিটার হাস না হলেও অন্য কোনো বিশেষ ব্যক্তির সঙ্গে নিশ্চয় তাদের কোনো একটি বিষয় ছিল— দলের অনেকেই এমনটা মনে করছেন। কারণ দর্শানোর নোটিস নিয়ে আলোচনার সময় নিশ্চয় এসব বিষয়েও কথা হবে।
বুধবার রাত কিংবা বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যেই কক্সবাজার অবস্থানকারী এনসিপির পাঁচ নেতা ঢাকায় ফিরতে পারেন বলে তাদের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন জানিয়েছেন। এনসিপির পাঁচ নেতা এখনও কক্সবাজারেই অবস্থান করছেন। তবে তারা হোটেল পরিবর্তন করেছেন। বুধবার দুপুর ১টার দিকে কক্সবাজার শহর থেকে ২৮ কিলোমিটার দূরের ইনানীর জালিয়াপালং এলাকার হোটেল ‘সি পার্ল রিসোর্ট’ ত্যাগ করেন পাঁচ নেতা।
হোটেলটির প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কমান্ডার কামরুজ্জামান বলেন, দুপুরে তারা চেক আউট করেন এবং তারা প্রবেশ করার দিন গতকাল ও আজ আমাদের হোটেলে কোনো বিদেশি নাগরিক অবস্থান করেননি।
কক্সবাজার শহরে পৌঁছে তারা কলাতলীর শালিক রেস্তোরাঁয় মধ্যাহ্ন ভোজ সেরেছেন বলে জানান ওই রেস্তোরাঁর একজন কর্মকর্তা। এরপর বিকাল ৩টার দিকে সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে অবস্থিত ‘প্রাসাদ প্যারাডাইজ’ হোটেলে ওঠেন এনসিপি নেতারা।
হোটেল ‘প্রাসাদ প্যারাডাইজের’ ব্যবস্থাপক মো. ইয়াকুব আলী বলেন, বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে তারা হোটেলে ওঠেছেন। প্রথমে তারা পাশের একটি হোটেলে গিয়েছিলেন; সম্ভবত সেখানে ভালো লাগেনি, তাই আমাদের এখানে এসেছেন। আগে থেকে বুকিং ছিল না। আজ এসেই চেক ইন করেছেন, তবে কখন তারা চলে যাবেন সে বিষয়ে কিছু জানাননি।
সন্ধ্যা ৭টার দিকে তারা হোটেল থেকে বেরিয়ে সৈকতে সময় কাটাচ্ছিলেন।
এনসিপির পাঁচ নেতার সঙ্গে থাকা স্থানীয় একজন সংগঠক বলেন, গতকাল যখন নেতারা এসেছিলেন, কক্সবাজারের স্থানীয় কোনো নেতাকর্মীই বিষয়টি জানতেন না। তারা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত সফরে এসেছেন। মিডিয়ায় খবর দেখার পর কয়েকজন নেতাকর্মী রাতে হোটেলে তাদের সঙ্গে দেখা করেন। ছড়িয়ে পড়া গুজবে নেতারা বিরক্ত বলে মনে হয়েছে।
কক্সবাজারে আসার পর থেকে স্থানীয় কয়েকজন তাদের সঙ্গে রয়েছেন। তবে নেতারা কখন কক্সবাজার ত্যাগ করবেন, সে বিষয়ে তারাও অবগত নন বলে জানান এনসিপির এই সংগঠক।
এনসিপি নেতারা কক্সবাজারে আসার পর থেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে রয়েছেন বলে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) জসীম উদ্দিনের ভাষ্য। তিনি বলেন, এনসিপি নেতারা আসবেন, এ বিষয়টি পুলিশ অবগত ছিল না। তবে যখন থেকে তারা কক্সবাজার এসেছেন, তখন থেকে তাদের প্রতি বিশেষ নজরদারি রয়েছে।
জসীম উদ্দিন বলেন, কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই। তাই বিশেষ কোনো কিছু না। দেশের একজন নাগরিকের যতটুকু নিরাপত্তা দরকার, তাই দিচ্ছি আমরা। তবে এ মুহূর্তে তারা যেহেতু রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ, তাই তাদের মুভমেন্ট নজরদারিতে রেখে যতটুকু দরকার নিরাপত্তা দিচ্ছি।
এনসিপির নেতারা কখন কক্সবাজার ত্যাগ করবেন এই বিষয়ে পুলিশ অবগত নয় বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।
এনসিপির নেতাদের এমন ‘গোপনে’ ও বিশেষ দিনে কক্সবাজার আগমন ঘিরে বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝেও প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। মঙ্গলবার ইনানীর হোটেলের সামনেই বিক্ষোভ করেন সেখানকার স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা।
বিক্ষোভকারীদের নেতৃত্বে থাকা উখিয়া উপজেলা বিএনপির নেতা সেলিম সিরাজী বলেন, বিক্ষোভ করার জন্য কোনো দলীয় নির্দেশনা ছিল না। মিডিয়ার মাধ্যমে খবর পেয়েই আমরা গিয়েছি। তাদের দল থেকে আজকে তাদেরকেই কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে, তাই আমাদের বিক্ষোভ করা যে যৌক্তিক সেটা তো এখানেই প্রমাণিত।
বিক্ষোভে থাকা জেলা যুবদলের সদস্য রফিকুল হুদা চৌধুরী বলেন, এমন বিশেষ দিনে এসব গুরুত্বপূর্ণ নেতারা এখানে কেন আসবেন? এটা তো সন্দেহের। আমরা স্বঃপ্রণোদিত হয়েই এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে বিক্ষোভ করেছি।
সূর্যাস্তের আগে সমুদ্র সৈকত থেকে ফেইসবুক লাইভ করেন এনসিপি নেতা সার্জিস আলম। তবে এ সময় তিনি কক্সবাজার সফর নিয়ে কিছু বলেননি।
তিনি বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির দেওয়া ইশতেহারের ২১ নম্বর দফায় আছে জলবায়ু সহনশীলতা এবং নদী ও সমুদ্র রক্ষা। অপার সম্ভাবনার জায়গা এই সমুদ্র। এই সমুদ্রকে অর্থাৎ এই ব্লু সি-কে আমরা কীভাবে ব্লু-ইকোনমিতে পরিণত করতে পারি এবং কীভাবে জীব-বৈচিত্র্য রক্ষা করতে পারি, সমুদ্র তীরবর্তী মানুষদের জন্য একটি বাসযোগ্য স্থান তৈরি করতে পারি, গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের কারণে বেড়ে চলা সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা নিয়ন্ত্রণ এসব বিষয়েই জরুরি পদক্ষেপ নিতেই আমরা ইশতেহার ঘোষণা করেছি।
তিনি বলেন, সমুদ্রকেন্দ্রিক সব সমস্যা দ্রুত সমাধান না হলে এই অপরূপ সৌন্দর্য হারানোর পাশাপাশি সমুদ্র তীরবর্তী সব বসতি কিংবা জায়গা সমুদ্র গর্ভে চলে যেতে পারে। এসব বিষয়ে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব মনে করিয়ে দেওয়াও আমাদের লক্ষ্য। এ সমুদ্র যেন আমরা সম্পদে পরিণত করতে পারি। খনিজসম্পদ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ সম্পদ যেন এই সমুদ্র থেকে একটি নির্দিষ্ট নিয়মে পেতে পারি, এগুলো আমাদের নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
নদী ও সমুদ্র রক্ষার ওপর জোর দিয়ে সার্জিস আলম বলেন, আমাদের জীবনধারণ, চলাচল, বসতবাড়ি, খাওয়া-দাওয়া সবকিছু নদী ও সমুদ্রের সঙ্গে জড়িত। এজন্য নদী ও সমুদ্র আমাদের দরকার বলে মনে করি।
তিনি বলেন, আমরা কক্সবাজারে লক্ষ্য করেছি, ব্যবস্থাপনা ছাড়াই যেখানে-সেখানে দালান তৈরি করা হচ্ছে; যেখানে-সেখানে মানুষ জমি দখল করছে। এসব অব্যবস্থাপনার কারণে গ্লোবাল ওয়ার্মিং তৈরি হচ্ছে। তাই পরিবেশ, সম্পদ ও জলবায়ু নিয়ে সচেতন হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আপনার মতামত লিখুন : :