ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার সলিমগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে আব্দুল্লাহ (২৭) নামে এক যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি বাঞ্ছারামপুর উপজেলার তেজখালি ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের আবুল হোসেন ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, গত শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলার সলিমগঞ্জ বড়াইল গ্রামে টাকা চুরি করার সময় জনতার হাতে আটক হয় আব্দুল্লাহ। এ সময় গ্রামবাসী তাকে নির্যাতনের পর সলিমগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে সোপর্দ করে।
স্বজনদের অভিযোগ, রাতে ফাঁড়িতে আব্দুল্লাহকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় নির্যাতন চালানো হয়। পরদিন রবিবার বিকেলে অসুস্থ হয়ে পড়লে ফাঁড়ির পুলিশ তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরিবারের সদস্যদের দাবি, নির্যাতন চালিয়ে আব্দুল্লাহর হাতের নখ উপড়ে ফেলা হয়েছে এবং কপালের চামড়া ছিলে দেওয়া হয়েছে।
আব্দুল্লাহর মা জোসনা বেগম বলেন, আমার ছেলে অপরাধী হলে আইনের মাধ্যমে শাস্তি দিতো। তাকে এভাবে জীবন দিতে হবে কেন? পুলিশের হেফাজতে আমার ছেলের মৃত্যু হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।
এদিকে এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই সাকিল মিয়া বাদী হয়ে সোমবার নবীনগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় ছলিমগঞ্জ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. মহিম উদ্দিন, তবি মিয়া, আলামিন, আয়নাল হকসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে আরও ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
এদিকে আব্দুল্লাহর মৃত্যুর পর স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ হয়ে সলিমগঞ্জ ফাঁড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে। উত্তেজনা বাড়তে থাকায় ফাঁড়িটি বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। একপর্যায়ে সেখানে সেনা মোতায়েন করতেও দেখা যায়।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে নবীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহিনুর রহমানকে অফিসে গিয়ে পাওয়া যায়নি। তার সরকারি ফোন নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া গেছে।
এছাড়া সার্কেল এসপি পিয়াস বসাকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার সরকারি নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। খুদেবার্তা পাঠালেও কোনো জবাব আসেনি।
নবীনগর সলিমগঞ্জ ফাঁড়ির ইনচার্জ মহিম উদ্দিন বলেন, চুরি করার অপরাধে জনসাধারণ গণপিটুনি দিয়ে আব্দুল্লাহকে পুলিশে সোপর্দ করে। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে আদালতে পাঠানোর আগেই তার মৃত্যু হয়।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) এহতেশামুল হক জানান, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। গুরুত্ব সহকারে ঘটনার তদন্ত চলছে।
আপনার মতামত লিখুন : :