২০২৫ সালে কোন দেশে আবাস গড়বেন ধনীরা

২০২৫ সালে অন্তত এক লাখ ৪২ হাজার ধনকুবের অন্য দেশে বসবাস শুরু করতে পারেন। বিনিয়োগের মাধ্যমে বসবাস ও নাগরিকত্ব বিষয়ক গ্লোবাল কনসালট্যান্সি জায়ান্ট হেনলি অ্যান্ড পার্টনারস এক প্রতিবেদনে এ পূর্বাভাস দিয়েছে। 
হেনলি প্রাইভেট ওয়েলথ মাইগ্রেশন রিপোর্ট ২০২৫-এ বলা হয়েছে, এই উচ্চ সম্পদধারী ব্যক্তিদের সংখ্যা ২০২৬ সালে আরো বেড়ে এক লাখ ৬৫ হাজারে পৌঁছবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যাদের প্রত্যেকেই ১০ লাখ ডলারের বেশি তারল্য সম্পদের অধিকারী। 
বিশ্বের সবচেয়ে বেশি প্রাচুর্য আকর্ষণকারী দেশ হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাত তার অবস্থান ধরে রেখেছে। এ বছর সেখানে নতুন করে রেকর্ড ৯ হাজার ৮শত ধনকুবেরের স্থায়ী বসবাস লাভের সম্ভাবনা রয়েছে। 
তাদের পছন্দের গন্তব্যের তালিকায় যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, সুইজারল্যান্ড ও সৌদি আরবও রয়েছে। তবে যুক্তরাজ্য থেকে সবচেয়ে বেশি ধনকুবের অন্য দেশে স্থানান্তরিত হবেন বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু ২০১৬ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্যও ধনকুবেরদের জন্য পছন্দের শীর্ষে ছিল।
সংযুক্ত আরব আমিরাত বর্তমানে উচ্চ আয়ের ব্যক্তিদের পছন্দের শীর্ষে অবস্থান করছে। ২০২৫ সালে ৯ হাজার ৮শত জন ধনকুবের সেখানে বসবাসের অনুমতি পাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৬ হাজার ৭শত। আর যুক্তরাষ্ট্র রয়েছে দ্বিতীয় অবস্থানে। সেখানকার আনুমানিক সাড়ে সাত হাজার নতুন ধনকুবের বসবাসের অনুমতি পেতে পারেন। তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইতালি ও চতুর্থ স্থানে রয়েছে সুইজারল্যান্ড।
সৌদি আরবেও ধনকুবেরদের আগমন দ্রুত বাড়ছে। ২০২৫ সালে দেশটিতে দুই হাজার ৪০০ ধনকুবের প্রবেশের আশা করা হচ্ছে, যা আগের বছরের তুলনায় আট গুণ বেশি।
এদিকে যুক্তরাজ্য এক বছরে সর্বোচ্চ সংখ্যক সম্পদশালী হারাতে যাচ্ছে বলে সংস্থাটি পূর্বাভাস দিয়েছে। দেশটি থেকে সাড়ে ১৬ হাজার ধনকুবের অন্য দেশে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। চীন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্ষতির মুখে রয়েছে, যেখান থেকে সাত হাজার ৮শত ধনকুবের অন্য দেশে বসবাস গ্রহণ করতে পারেন। এ ছাড়া এশিয়ার দেশ দক্ষিণ কোরিয়া হারাতে পারে দুই হাজার ৪০০ জন। অন্যদিকে ভারত হারাতে পারে সাড়ে তিন হাজার ধনকুবের। 
ইউরোপীয় ইউনিয়নের শক্তিশালী দেশ ফ্রান্স, স্পেন ও জার্মানি ২০২৫ সালে যথাক্রমে ৮০০, ৫০০ ও ৪০০ ধনকুবেরকে হারাতে পারে। অন্যদিকে আয়ারল্যান্ড ১০০, নরওয়ে ১৫০ ও সুইডেন ৫০ জন ধনকুবেরকে হারাতে পারে।
সংযুক্ত আরব আমিরাত ও যুক্তরাষ্ট্র কেনো উচ্চ আয়ের ব্যক্তিদের পছন্দের। এই দেশগুলো মূলত উদার অভিবাসননীতি, শূন্য আয়কর, বিশ্বমানের অবকাঠামো ও রাজনৈতিক স্থিরতার মাধ্যমে উচ্চ আয়ের ব্যক্তিদের স্বাগত জানাচ্ছে বলে জানিয়েছে হেনলি অ্যান্ড পার্টনারস।
২০১৯ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত গোল্ডেন ভিসা প্রকল্প নিয়ে হাজির হয়, যা ২০২২ সালে আরো সুযোগ বাড়াতে সেটিতে কিছু পরিবর্তন আনা হয়। এই ভিসাটি মূলত লম্বা সময়ের (পাঁচ থেকে ১০ বছর) জন্য দেওয়া হয় এবং এটি নবায়নযোগ্য।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র আশা করছে, ২০২৫ সালে তারা সাড়ে সাত হাজার ধনকুবেরকে তাদের ইবি-৫ ভিসা কর্মসূচি আকৃষ্ট করতে পারবে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ এসেছে এবং কয়েক লাখ চাকরি সৃষ্টি হয়েছে বলে প্রতিবেদন থেকে জানা যায়।
সূত্র : এনডিটিভি