• ঢাকা
  • বুধবার, ২৫ জুন, ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২
Bancharampur Barta
Bongosoft Ltd.

আত্মবিশ্বাস বাড়াতে যেভাবে নিজেকে গুছিয়ে নিবেন


বাঞ্ছারামপুর বার্তা | জীবনযাপন ডেস্ক জুন ২৫, ২০২৫, ০৫:১৯ পিএম আত্মবিশ্বাস বাড়াতে যেভাবে নিজেকে গুছিয়ে নিবেন

আমাদের সমাজে এখনও অনেকেই মনে করেন সেল্ফ গ্রুমিং বা পরিপাটি থাকা মানে শুধুই মেয়েলি বিষয় কিংবা ফ্যাশনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। কিন্তু বাস্তবতা হলো, নারী বা পুরুষ, শিক্ষার্থী বা চাকরিজীবী, সব শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্যই সেল্ফ গ্রুমিং খুবই প্রয়োজনীয় অভ্যাস। এটি আপনার আত্মপরিচয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিক হয়ে উঠতে পারে, যদি আপনি নিয়মিত এই চর্চায় অভ্যস্ত হতে পারেন। সেল্ফ গ্রুমিং বা নিজেকে পরিপাটি রাখার চর্চা শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য নয়, এটি আত্মবিশ্বাস, ব্যক্তিত্ব এবং মানসিক সুস্থতার প্রতীকও বটে। একটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং সুশৃঙ্খল উপস্থিতি অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ করে তোলে। এছাড়াও পেশাগত বা ব্যক্তিগত যেকোনো পরিবেশে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কীভাবে নিজেকে পরিপাটি রাখবেন-
১. পরিচ্ছন্নতা
সেল্ফ গ্রুমিংয়ের প্রথম ধাপটি হলো নিজেকে ভালোভাবে বোঝা এবং নিজের শরীর ও মনের প্রতি যত্নবান হওয়া। প্রতিদিন একটি সুনির্দিষ্ট রুটিনে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা, মুখ-মাথা-নখ পরিষ্কার রাখা, চুল আঁচড়িয়ে রাখা, নিয়মিত গোসল করা ইত্যাদি মৌলিক বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে।
২. পোশাক
অনেক সময় দেখা যায়, কেউ হয়তো খুব ভালো পোশাক পরেছেন, কিন্তু মুখে ক্লান্তির ছাপ বা অযত্নে থাকা চুল তাঁর পুরো ব্যক্তিত্বকে নিচে নামিয়ে দেয়। আবার, কেউ হয়তো খুব সাধারণ পোশাকেই আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে, পরিষ্কার-পরিপাটি অবস্থায় এমনভাবে নিজেকে উপস্থাপন করেন যে তাকে দেখলেই এক ধরনের গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়। সেল্ফ গ্রুমিংয়ের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো পোশাক বেছে নেওয়া। আমরা যা পরিধান করি তা আমাদের মনের অবস্থা, পছন্দ এবং পরিবেশের সঙ্গে খাপ খায় কি না, সেটি গুরুত্বপূর্ণ। অফিস বা চাকরির সাক্ষাৎকারে যাওয়ার সময় হালকা, সুপরিষ্কার ও মর্যাদাপূর্ণ পোশাক পরা উচিত। তেমনি, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা বা অবসর কাটানোর সময় আরামদায়ক পোশাক বেছে নেওয়া যুক্তিসঙ্গত। কিন্তু যেকোনো ক্ষেত্রেই পোশাক যেন পরিচ্ছন্ন, সুগন্ধযুক্ত এবং সঠিকভাবে পরিপাটি হয়, তা খেয়াল রাখা দরকার। এতে আপনার প্রতি অন্যের দৃষ্টিভঙ্গি যেমন ইতিবাচক হয়, তেমনি আপনি নিজেও স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন।
৩. ত্বকের যত্ন
ত্বকের যত্নও সেল্ফ গ্রুমিংয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। প্রতিদিন ঘুমানোর আগে মুখ ধুয়ে নেওয়া, ত্বকের ধরন অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা, রোদে বের হলে সানস্ক্রিন লাগানো ইত্যাদি ছোট ছোট অভ্যাস দীর্ঘমেয়াদে আপনার ত্বককে সুস্থ ও প্রাণবন্ত রাখতে সহায়তা করে। ত্বকের পাশাপাশি দাঁত ও মুখের স্বাস্থ্যও গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন দু’বার দাঁত ব্রাশ করা, জিভ পরিষ্কার রাখা, ও প্রয়োজনে মাউথওয়াশ ব্যবহার করা উচিত। এতে মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয় না, এবং আপনার সঙ্গে কথা বললে কেউ অস্বস্তি বোধ করবে না।
৪. বডি ল্যাঙ্গুয়েজ বা শরীরের ভাষা
নিজেকে উপস্থাপনের সময় শরীরের ভাষাও সেল্ফ গ্রুমিংয়ের অংশ হিসেবে বিবেচিত। সবসময় সোজা হয়ে বসা বা দাঁড়ানো, চোখে চোখ রেখে কথা বলা, শান্তভাবে হাসা, স্পষ্টভাবে কথা বলা ইত্যাদি বিষয়গুলো আপনাকে অন্যদের চোখে স্মার্ট এবং আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। একই সঙ্গে, নিজের আচরণে বিনয় ও সৌজন্যবোধ রাখা, কারও সঙ্গে কটু ভাষায় কথা না বলা বা উত্তেজিত না হওয়া এই ধরনের মানসিক গ্রুমিংও সামাজিক পরিবেশে আপনাকে গ্রহণযোগ্য করে তোলে।
৫. ছোট ছোট অভ্যাস
সেল্ফ গ্রুমিংয়ের সহজ কৌশলগুলো রপ্ত করতে চাইলে প্রথমেই ছোট ছোট কিছু অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। যেমন- নিয়মিত একই সময় ঘুম থেকে ওঠা এবং বিছানা গুছিয়ে ফেলা, নিজের ঘর বা টেবিল পরিষ্কার রাখা, কাপড় গুছিয়ে রাখা, প্রয়োজনীয় টুথব্রাশ, চিরুনি, নেলকাটার, ফেসওয়াশ ইত্যাদি আলাদা করে একটি ছোট বক্সে রেখে নিয়মিত ব্যবহার করা, সপ্তাহে একদিন নখ কাটা ও চুল ট্রিম করা ইত্যাদি। এগুলো একবার অভ্যাসে পরিণত হলে আপনি লক্ষ্য করবেন, নিজের মধ্যে একটা শৃঙ্খলা এসেছে এবং তা আপনার অন্যান্য কাজেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
অর্থাৎ, সেল্ফ গ্রুমিং কোনো বিলাসিতা নয়, এটি একটি প্রয়োজন। আপনি যেভাবে নিজেকে উপস্থাপন করেন, তাই-ই প্রথমে অন্যদের মনে আপনার পরিচয় গড়ে তোলে। এই পরিচয় যদি হয় পরিপাটি, পরিচ্ছন্ন, সুগন্ধযুক্ত ও আত্মবিশ্বাসী, তাহলে যেকোনো ক্ষেত্রেই আপনি সফলতার পথে একধাপ এগিয়ে থাকতে পারবেন। তাই নিজেকে ভালোবাসুন, নিজের প্রতি যত্নবান হোন, আর নিয়মিত সেল্ফ গ্রুমিংয়ের মাধ্যমে নিজের সেরা ভার্শন হয়ে উঠুন।

Side banner