• ঢাকা
  • সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৩০ ভাদ্র ১৪৩২
Bancharampur Barta
Bongosoft Ltd.

ন্যাটো দেশগুলো তেল কেনা বন্ধ করলে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা


বাঞ্ছারামপুর বার্তা | আন্তর্জাতিক ডেস্ক সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৫, ০৯:২৮ এএম ন্যাটো দেশগুলো তেল কেনা বন্ধ করলে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা

যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটো দেশগুলো রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করলেই মস্কোর বিরুদ্ধে বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবেন বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিজের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে তিনি আরও প্রস্তাব দিয়েছেন, চীনের ওপর ৫০ থেকে ১০০ শতাংশ শুল্ক বসাতে হবে। 
রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ন্যাটো সদস্যদেশগুলো রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করলে তিনি মস্কোর বিরুদ্ধে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে প্রস্তুত। নিজস্ব প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যাল-এ এক পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, ন্যাটো দেশগুলো সম্মত হলে এবং পদক্ষেপ নিলে তিনি “রাশিয়ার ওপর বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা” আরোপ করবেন।
এর আগে একাধিকবার রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিলেও মস্কো সেই সময়সীমা ও হুমকি উপেক্ষা করলে ট্রাম্প কোনো পদক্ষেপ নেননি। তিনি রাশিয়ার তেল কেনাকে “চমকপ্রদ” বলে আখ্যা দেন এবং প্রস্তাব করেন ন্যাটো যেন চীনের ওপর ৫০ থেকে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে।
ট্রাম্পের দাবি, এতে চীনের রাশিয়ার ওপর “শক্ত নিয়ন্ত্রণ” দুর্বল হবে। ন্যাটো সদস্যদের উদ্দেশে লেখা এক বার্তায় ট্রাম্প বলেন, “আমি প্রস্তুত। আপনারা যখন বলবেন, তখনই শুরু করব।”
তিনি আরও বলেন, “রাশিয়ার তেল কেনা, বিশেষ করে কারও কারও ক্ষেত্রে, অবিশ্বাস্য। এতে রাশিয়ার সঙ্গে আপনাদের দর-কষাকষির অবস্থান দুর্বল হয়ে যাচ্ছে।”
ট্রাম্প দাবি করেন, রাশিয়ার জ্বালানি কেনা বন্ধ করা এবং চীনের ওপর ভারী শুল্ক আরোপ করা — যা যুদ্ধ শেষে তুলে নেওয়া হবে যুদ্ধ দ্রুত শেষ করতে “বড় সহায়তা” দেবে।
রাশিয়ার পূর্ণাঙ্গ আগ্রাসনের পর থেকে ইউরোপ ধীরে ধীরে রাশিয়ান জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমিয়েছে। ২০২২ সালে ইইউ দেশগুলো প্রায় ৪৫ শতাংশ গ্যাস আমদানি করত রাশিয়া থেকে। এ বছর সেই হার নেমে আসবে প্রায় ১৩ শতাংশে। তবে ট্রাম্পের মন্তব্যে বোঝা যাচ্ছে, তিনি এই মাত্রাকেও যথেষ্ট মনে করছেন না।
মূলত ন্যাটোর সঙ্গে রাশিয়ার উত্তেজনা বাড়ার মধ্যে ট্রাম্পের এই বার্তা এসেছে। গত বুধবার এক ডজনের বেশি রুশ ড্রোন পোল্যান্ডের আকাশসীমায় প্রবেশ করে। ওয়ারশ বলেছে, ঘটনাটি উদ্দেশ্যমূলক, যদিও মস্কো একে তুচ্ছ করে বলেছে, পোল্যান্ডের কোনো স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা তাদের ছিল না।
এদিকে ডেনমার্ক, ফ্রান্স ও জার্মানি ন্যাটোর নতুন মিশনে যোগ দিয়েছে। তারা জোটের পূর্ব সীমান্তে সামরিক সরঞ্জাম সরিয়ে নিচ্ছে।
গত সপ্তাহে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও ইউরোপীয় দেশগুলোর প্রতি রাশিয়ার তেল ও গ্যাস কেনা বন্ধের আহ্বান জানান। এবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমাদের রাশিয়ার কাছ থেকে কোনো ধরনের জ্বালানি কেনা বন্ধ করতে হবে। শুধু তাই নয়, রাশিয়ার সঙ্গে কোনো ধরনের চুক্তিও করা যাবে না।”
২০২২ সালের পর থেকে ইউরোপীয় দেশগুলো রাশিয়ার তেল ও গ্যাস আমদানিতে প্রায় ২১০ বিলিয়ন ইউরো (১৮২ বিলিয়ন পাউন্ড) ব্যয় করেছে, যা ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর জন্য মস্কোকে অর্থ জুগিয়েছে বলে মনে করছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ার।
ইইউ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, ২০২৮ সালের মধ্যে রাশিয়ার জ্বালানি কেনা পুরোপুরি বন্ধ করবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র চাইছে প্রক্রিয়াটি দ্রুত হোক।
ট্রাম্পের বার্তা ইইউ নয়, সরাসরি ন্যাটোর উদ্দেশে দেওয়া। এর মধ্যে তুরস্কও রয়েছে, যারা রাশিয়ার অন্যতম বড় ক্রেতা এবং মস্কোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখা ন্যাটোর একমাত্র সদস্য। ফলে আঙ্কারাকে রাজি করানো সবচেয়ে কঠিন হতে পারে।

Side banner