দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের প্রেক্ষিতে ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মো. দবিরুল ইসলামের সম্পত্তি ক্রোক ও ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঠাকুরগাঁও বিজ্ঞ সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মো. জামাল হোসেন এ নির্দেশ দেন বলে নিশ্চিত করেছেন দুদকের সমন্বিত ঠাকুরগাঁও জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আজমির শরিফ মারজী।
এর আগে দুদকের সমন্বিত ঠাকুরগাঁও জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সাবেক এই সংসদ সদস্যের সম্পত্তি ক্রোকের জন্য আদালতে আবেদন করেন।
দুদকের আবেদনে বলা হয়েছে, দবিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও সীমাহীন দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎপূর্বক নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঠাকুরগাঁও সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের একটি টিম অনুসন্ধান করে। অনুসন্ধানে দবিরুল ইসলামের জ্ঞাত আয়ের সাথে অসংগতিপূর্ণ সম্পদের মূল্য ১ কোটি ৪৮ লাখ ৬৬ হাজার ৬৬১ টাকা পাওয়া যায়।
পরবর্তীতে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দবিরুল ইসলামের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ক্রোক করার জন্য ঠাকুরগাঁও বিজ্ঞ সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে প্রার্থনা করার অনুমতি দেওয়া হয়।
সাবেক এমপি আলহাজ্ব মো. দবিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজিসহ বেশ কয়েকটি মামলা চলমান রয়েছেন। বর্তমানে তিনি দিনাজপুর জেলা কারাগারে রয়েছেন। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি মামলায় জামিনও পেয়েছেন তিনি। তবে সকল মামলা থেকে জামিনে মুক্ত হওয়া এবং পরবর্তীতে তিনি তার নামে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি বা হস্তান্তরের চেষ্টা করছেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। সাবেক এই সংসদ সদস্যের নামে অর্জিত স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পদ ক্রোক/অবরুদ্ধ করা না হলে তা হস্তান্তর, স্থানান্তর অথবা বেহাত হওয়ার জোর সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এসব স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর, বিক্রয় বা মালিকানা বদল রোধের জন্য অবরুদ্ধ/ক্রোক করা প্রয়োজন।
দুদকের এই আবেদনের প্রেক্ষিতে আজ ঠাকুরগাঁও বিজ্ঞ সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে বিচারক এই আদেশ দেন।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে দুদকের সমন্বিত ঠাকুরগাঁও জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আজমির শরিফ মারজী জানান, সাবেক এমপির সম্পত্তি ক্রোক করার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছিল। আজ আদালত আমাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশনা দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর সাবেক সংসদ সদস্য দবিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে হত্যা-চাঁদাবাজিসহ একাধিক মামলা হয়। গত বছরের ২ অক্টোবর বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান বাবলুর চাঁদাবাজির মামলায় ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া থানা আওয়ামী লীগ নেতা আলমগীর হোসেনের বাসা থেকে দবিরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর থেকে তিনি দিনাজপুর জেলা কারাগারে রয়েছেন।
১৯৮৬ সালে প্রথম এমপি নির্বাচিত হন দবিরুল ইসলাম। এরপর থেকে ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ পর্যন্ত তিনি ঠাকুরগাঁও-২ আসনে টানা ৭ বার এমপি নির্বাচিত হন।
আপনার মতামত লিখুন : :