সারা দেশের অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি ও এমপিওভুক্তির (মান্থলি পে অর্ডার) দাবিতে আবারও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমন্বয় পরিষদ। পরিষদের নেতারা বলছেন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দেওয়া ১৫ দিনের মৌখিক আশ্বাসের পর তিন মাস পার হলেও কোনো বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের রাস্তায় তাদের অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায়।
সংগঠনটির পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে অনতিবিলম্বে সব বিশেষ (অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী) বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি ও এমপিওভুক্তি নিশ্চিত করা; প্রতিবন্ধীবান্ধব অবকাঠামো নিশ্চিত করা; বিশেষ শিক্ষার্থীদের মাসিক শিক্ষা উপবৃত্তি ৩ হাজার টাকা নির্ধারণ করা; শিক্ষার্থীদের জন্য মিড-ডে মিল, খেলাধুলার সরঞ্জাম, শিক্ষাসামগ্রী ও থেরাপি সেন্টার বাস্তবায়ন; ভোকেশনাল শিক্ষা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং সরকারি চাকরিতে নির্ধারিত কোটা বাস্তবায়ন।
অবস্থানরতরা বলেন, ২০১৯ সালের ২০ ডিসেম্বর সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়গুলোর স্বীকৃতি ও এমপিওভুক্তির জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু করে। সেসময় সারাদেশ থেকে ২,৭৪১টি প্রতিষ্ঠান আবেদন জমা দেয়। যাচাই-বাছাই শেষে ১,৭৭২টি প্রতিষ্ঠান পরবর্তী নির্দেশনার জন্য প্রস্তুত বলে মন্ত্রণালয় জানায়। এরপরও স্বীকৃতি ও এমপিও প্রক্রিয়া দীর্ঘসূত্রতায় পড়ে যায়।
এর প্রতিবাদে শিক্ষক-কর্মচারীরা ১৯ দিনব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি পালন করলে কর্তৃপক্ষের মৌখিক আশ্বাসে তা স্থগিত করা হয়। কিন্তু আশ্বাসের বাস্তবায়ন না হওয়ায় গত ২১ জুলাই আবারও আন্দোলনে নামে শিক্ষকরা। তৃতীয় দিনের আলোচনায় সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ১৫ দিনের মধ্যে সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেন। তবে সেই আশ্বাসের তিন মাস পার হলেও কোনো ফল না পাওয়ায় শিক্ষকরা আবারও রাস্তায় নামার ঘোষণা দিয়েছেন বলে জানান সংগঠনটির নেতারা।
সংগঠনের সভাপতি মো. ইলিয়াস রাজ বলেন, বর্তমানে দেশে স্বীকৃত বিশেষ বিদ্যালয় রয়েছে ৫৭টি, যাচাই-বাছাই সম্পন্ন ১,৭৭২টি এবং ম্যানুয়ালি আবেদন করা বিদ্যালয়সহ মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৯টি। এসব প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৭ লাখ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। দেশে প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ২০ লাখ। এ ছাড়া এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন প্রায় ৬৩ হাজার শিক্ষক ও কর্মচারী।
তিনি বলেন, মানবেতর জীবনযাপনকারী শিক্ষক-কর্মচারীরা দেশের অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষানীতির লক্ষ্য পূরণে কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের দাবি বাস্তবায়ন হলে সরকারের অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষাকার্যক্রম আরও এগিয়ে যাবে।
অবস্থান কর্মসূচিতে বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমন্বয় পরিষদের মুখ্য সমন্বয়ক মো. গাউসুল আজম শীমু, সাধারণ সম্পাদক মোছা. রিমা খাতুনসহ শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারী উপস্থিত রয়েছেন।
আপনার মতামত লিখুন : :