গরমকালে বাজারে বাহারি ফলের ভিড়ে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও জনপ্রিয় ফলের নাম কাঁঠাল। জাতীয় ফল হিসেবে কাঁঠালের পরিচিতি থাকলেও অনেকেই জানেন না, শুধু স্বাদের জন্য নয়, কাঁঠাল খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্যও দারুণ উপকারী। গরমকালে শরীর সুস্থ ও চাঙা রাখতে যে কটি ফল বিশেষভাবে উপকারী, তার মধ্যে কাঁঠাল অন্যতম। হজমে সহায়তা থেকে শুরু করে পানিশূন্যতা প্রতিরোধ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো, ওজন নিয়ন্ত্রণসহ নানা কারণেই কাঁঠাল দারুণ উপকারী। বিশেষ করে গরমের সময় এই ফল খেলে শরীর সুস্থ থাকে, বাড়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।
চলুন জেনে নেওয়া যাক কাঁঠালের ৮টি আশ্চর্য উপকারিতা
১। শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে।
২। শক্তি বাড়ায় ও ক্লান্তি দূর করে।
৩। হজমে সহায়ক।
৪। পানিশূন্যতা বা মাথাব্যথা প্রতিরোধ করে।
৫। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়।
৬। হাড় মজবুত করে।
৭। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
৮। ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে: কাঁঠালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ‘সি’ এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। গরমের সময় সহজেই সর্দি-জ্বর বা সংক্রমণ হতে পারে। নিয়মিত কাঁঠাল খেলে এই ঝুঁকি কমে যায়। এ ছাড়া এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে, যা সুস্থ থাকতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
শক্তি বাড়ায় ও ক্লান্তি দূর করে: গরমের দিনে অতিরিক্ত ঘাম এবং পানি শূন্যতার কারণে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। কাঁঠাল প্রাকৃতিকভাবে গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ এবং অন্যান্য শক্তিদায়ক উপাদানে ভরপুর। এটি দ্রুত শরীরে শক্তি জোগায় এবং ক্লান্তি দূর করে।
হজমে সহায়ক: কাঁঠালে থাকা ফাইবার হজমপ্রক্রিয়াকে সক্রিয় রাখে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে। গরমের দিনে অনেকেরই হজমের সমস্যা দেখা দেয়, কাঁঠাল তা সহজেই সমাধান করতে পারে।
পানিশূন্যতা বা মাথাব্যথা প্রতিরোধ করে : কাঁঠালের পাকা কোষে জলীয় উপাদান থাকে প্রায় ৮৯ দশমিক ৮৫ শতাংশ, যা কাঁঠালের বিচির (প্রায় ৬০.০৭৫ শতাংশ) তুলনায় অনেক বেশি। গরমে ঘামে শরীর থেকে যে পানি বেরিয়ে যায়, তা পূরণে কাঁঠাল ভালো কাজ করে। কাঁঠালে ইলেকট্রোলাইটও থাকে, যা শরীরের পানির ভারসাম্য ঠিক রাখতে সাহায্য করে এবং পানিশূন্যতার কারণে ক্লান্তি বা মাথাব্যথা প্রতিরোধে সহায়ক।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়: এই ফলে থাকা ভিটামিন ‘এ’ ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ত্বককে ভিতর থেকে সুন্দর করে তোলে। নিয়মিত কাঁঠাল খেলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে এবং ব্রণ বা দাগ-ছোপ কমে।
হাড় মজবুত করে: কাঁঠালে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ফসফরাস রয়েছে, যা হাড়কে শক্তিশালী করে। বিশেষ করে যাদের বয়স বাড়ছে কিংবা হাড় দুর্বল, তাদের জন্য কাঁঠাল অত্যন্ত উপকারী।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে: পটাশিয়াম সমৃদ্ধ কাঁঠাল উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এতে করে হৃদরোগের ঝুঁকিও অনেকটাই কমে যায়।
ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: মিষ্টি স্বাদের হলেও কাঁঠালে ক্যালরি ও চর্বি খুবই কম থাকে। এতে থাকা আঁশ পেট ভরাট রাখে, ফলে ঘন ঘন খাওয়ার ইচ্ছা কমে যায় এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এড়াতে সহায়তা করে। এসব কারণে কাঁঠাল ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক একটি স্বাস্থ্যকর ফল।
আপনার মতামত লিখুন : :