ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর পৌরসভার দৈনন্দিন উৎপন্ন ১০ থেকে ১২ টন বর্জ্য বছরের পর বছর ধরে ফেলা হচ্ছে বাঞ্ছারামপুর-নবীনগর-ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রধান সড়কের পাশে। এতে আশপাশের এলাকা তীব্র দুর্গন্ধে পরিণত হয়েছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে। ভোগান্তিতে পড়ছেন মডেল মসজিদের মুসল্লিসহ শিক্ষার্থী, পথচারী ও যানবাহনের যাত্রীরা।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) সরেজমিনে দেখা যায়, মাতুরবাড়ি মোড়সংলগ্ন প্রধান সড়কের দুই ফুট জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে আবর্জনার স্তূপ। দুর্গন্ধে নাক-মুখে হাত চেপে চলাচল করছেন পথচারীরা। বাতাসের সঙ্গে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে চারদিকে। বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বাঞ্ছারামপুর সরকারি কলেজ, মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষার্থীদের। ময়লার স্তূপের পাশেই রয়েছে উপজেলা মডেল মসজিদ, নামাজ আদায় করতেও কষ্ট হচ্ছে মুসল্লিদের।
স্থানীয়রা জানান, আবর্জনার স্তূপে মাঝে মাঝে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়া হয়। এতে গোটা এলাকায় ধোঁয়ার আস্তরণ তৈরি হয়, যা সড়কে চলাচলরত মোটরসাইকেল আরোহীদের জন্য দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ড থেকে প্রতিদিন প্রায় ১০-১২ টন বর্জ্য সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু নিজস্ব কোনো ডাম্পিং স্টেশন বা ভাগাড় না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে এসব বর্জ্য সড়কের পাশেই ফেলা হচ্ছে।
বিশিষ্ট পরিবেশবিদ শামীম আহমেদ বলেন, সড়কের পাশে ময়লার ভাগাড় পরিবেশকে দূষিত করে। বাতাসের গুণগত মান কমে যায় এবং জলজ পরিবেশও দূষিত হতে পারে। ময়লা থেকে সৃষ্ট দুর্গন্ধ পথচারী এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য খুবই কষ্টদায়ক। এর ফলে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়। খোলা জায়গায় ময়লা ফেলার কারণে মশা-মাছি ও অন্যান্য রোগ বাহকের উপদ্রব বাড়ে, যা বিভিন্ন রোগের বিস্তার ঘটায়। অনেক সময় সড়কের পাশে ময়লা ফেলার কারণে সড়কেরও ক্ষতি হয়, যেমন পিচঢালা সড়ক ভেঙে যাওয়া বা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া। সড়কের পাশে ময়লার স্তূপ থাকলে তা পথচারী এবং যানবাহনের চলাচলে বিঘ্ন ঘটায়, যা দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ায়।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক ফেরদৌস আরা বলেন, পৌর বর্জ্য ফেলার জন্য আমাদের নিজস্ব কোনো জমি ছিল না, তাই আগের মেয়র তোফাজ্জল এর আদেশেই বাঞ্ছারামপুর-নবীনগর প্রধান সড়কের পাশে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হতো, যা জনসাধারণ ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।
তিনি জানান, ইতোমধ্যে বাঞ্ছারামপুর পৌরসভার বর্জ্য ফেলার জন্য নিজস্ব ভাগাড় বা ডাম্পিংয়ের জন্য জায়গা ক্রয়ের জন্য বায়না দেওয়া হয়েছে। দ্রুত সময়ে জনসাধারণের কষ্ট লাঘব হবে।
আপনার মতামত লিখুন : :