• ঢাকা
  • বুধবার, ১৬ জুলাই, ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২
Bancharampur Barta
Bongosoft Ltd.

বৈশ্বিক উষ্ণতা


বাঞ্ছারামপুর বার্তা | মো. বিল্লাল হোসেন জুয়েল মে ৩, ২০২৪, ০৫:৫৬ পিএম বৈশ্বিক উষ্ণতা

প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় রসায়ন চর্চা আল-কেমি (অষপযবসু) নামে পরিচিত। আল-কেমি আরবি আল-কিমিয়া থেকে উদ্ভুত,যা দিয়ে মিশরীয় সভ্যতাকে বুঝানো হতো। জাবির ইবন হাইয়ানকে রসায়ন শাস্ত্রের ও ল্যাভসিয়েকে আধুনিক রসায়ন শাস্ত্রের জনক বলা হয়ে থাকে। রসায়ন প্রাচীন ও প্রধান বিজ্ঞানগুলোর অন্যতম। ভারতবর্ষে প্রায় ৫০০০ বছর পূর্বেই কাপড়কে আকর্ষণীয় করে তুলতে রঙের ব্যবহার শুরু হয়েছিল। মৌলিক যার ভর আছে বা কোন স্থান দখল করে অবস্থান করে এবং স্থিতিশীল বা গতিশীল অবস্থার পরিবর্তনে বাধা প্রদান করে, তাকে পদার্থ বলে। পদার্থের মধ্যে অণু থাকে যা আবার পরমাণুর সমন্বয়ে গঠিত। পরমাণু সমূহ গঠিত হয় ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউট্রন এর সমন্বয়ে এগুলোকে মূল কনিকা বলে। ইলেক্ট্রনের ভর ও চার্জ যথাক্রমে-৯.১১ঢ১০-৩১ শম, ও -১.৬ঢ১০-১৯ঈ প্রোটনের ভর ও চার্জ যথাক্রমে ১.৬৭৩ঢ১০-২৭শম ও +১.৬ঢ১০-১৯ঈ নিউট্রনের ভর ১.৬৭৫ঢ১০-২৭শম নিউট্রন আধানবিহীন কনিকা। মৌলিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম কনা, যার সাধারণত স্বাধীন অস্তিত্ব নেই কিন্তু ক্ষুদ্রতম এককরুপে সরাসরি রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারে তাকে পরমানু বলে। মৌলিক বা যৌগিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম কনা যার সাধারণত স্বাধীন অস্তিত্ব আছে কিন্তু ক্ষুদ্রতম এককরুপে সরাসরি রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারেনা তাকে অনু বলে। এ পৃথিবীর সামগ্রিক অবস্থা বদলে দেয়ার জন্য কয়েক ধরণের অনুই যথেষ্ট। যেমন ঈঙ২, ঈঙ৪, ঈঋঈ ইত্যাদি। আমরা জানি, দিন দিন পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়েই চলছে, যা (এষড়নধষ ডধৎসরহম) নামে পরিচিত। বায়ুমন্ডলে উপস্থাপিত যেসব গ্যাসীয় উপাদান পৃথিবীকে ঢালের মত ঢেকে রেখে উত্তপ্ত পৃথিবী পৃষ্ঠ হতে বিকিরিত তাপকে মহাশূন্যে ফিরে যেতে বাধা দেয় এবং পৃথিবী ও এর উপরিভাগের বায়ুমন্ডলকে উত্তপ্ত করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে তাদেরকে গ্রিন হাউজ গ্যাস বলে। গ্রিন হাউজ গ্যাস বিকিরিত ওজ রশ্মিকে শোষণ করে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি ঘটায়। গ্লোবাল ওয়ার্মিং এ গ্রিন হাউজ গ্যাস প্রত্যক্ষভাবে ভূমিকা রাখে। মূলত: ঈঙ২, ঈঐ৪, ঙ৩, ঈঋঈ, ঘ২ঙ ও জলীয় বাস্প হল গ্রিন হাউজ গ্যাস। এদের মধ্যে ঈঙ২ হল প্রধান গ্রিন হাউজ গ্যাস এর অবদান প্রায় ৪৯.৫%। এরপর ঈঐ৪ (১৮%), ঙ৩ (১২%) ঘঙঢ (৬.৫%) ঈঋঈ (১৪.৬%)। গ্লোবাল ওয়ার্মিং বিশ্বের জলবায়ুর ওপর উল্লেখিত প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে। (০১) সাগর মহাসাগর উত্তপ্ত হচ্ছে, সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, নিম্ন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। (০২) গ্রীষ্ম প্রধান এলাকায় শীতকাল সংক্ষিপ্ত এবং উষ্ণ হচ্ছে। গ্রীষ্মকাল দীর্ঘ এবং আরোও উত্তপ্ত হচ্ছে। (০৩) প্রচুর বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তবে মেরুকরণ, অনাবৃষ্টি এবং ভূমি ক্ষয় মারাত্মক আকার ধারণ করছে। (০৪) বন উজাড়ের সাথে দ্রুত শিল্পায়ন এবং শহরায়ন পৃথিবী পৃষ্ঠের কাছে বায়ুমন্ডলে এক অভেদ্য গ্যাস স্তরের সুষ্টি করছে। ফলে পৃথিবী নামক গ্রহটি হয়ে উঠছে একটি জলন্ত চুল্লি। (০৫) উদ্ভদ এবং প্রাণিরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। ফলে সামগ্রিক বস্তসংস্থান বেসামাল হয়ে পরছে। তাই এ পৃথিবীকে বাসযোগ্য রাখতে হলে আমাদেরকে অবশ্যই (এষড়নধষ ডধৎসরহম) কে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আর এ ব্যাপারে যে সমস্ত বিষয়গুলো বিশেষ করনীয় সেগুলো হল।
(০১) জনসাধারণকে (এষড়নধষ ডধৎসরহম) এর ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। (০২) ব্যাপক হারে বনায়ন সৃষ্টি করতে হবে, যাতে করে ঈঙ২ হ্রাস ও ঙ২ বৃদ্ধি পায়। (০৩) জমিতে রাসায়নিক সারের পরিবর্তে জৈব সার ও কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে। (০৪) যে কোন উপায়ে বনভূমি রক্ষা করতে হবে। (০৫) ঈঋঈ এর ব্যবহার কমিয়ে আনতে হবে। (০৬) জ্বালানিবিহীন যানবাহনকে উৎসাহী করতে হবে। (০৭)। জীবাশ্ম জ্বালানির পরিবর্তে সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, ঈঘএ ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে। (০৮) ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার কমিয়ে পাবলিক গাড়ি ব্যবহারকে উৎসাহী করতে হবে। (০৯) উন্নত প্রযুক্তির ইঞ্জিন আবিষ্কার করতে হবে, যাতে করে কম জ্বালানি ব্যবহারে অধিক দূরত্ব অতিক্রম করা যায়। (১১) নদী ও সাগর উপকূলবর্তী এলাকায় সুউচ্চ বাধ নির্মান করতে হবে যাতে করে সাগরের পানি বৃদ্ধি পেলেও তা উপকূলবর্তী এলাকায় প্রবেশ করতে না পারে।
এর মাধ্যমে তাপদাহ, খরা, বন্যা, জলোচ্ছাস এর মত দূর্যোগ থেকে আমাদের জনজীবন রক্ষা করা যেতে পারে।
মো. বিল্লাল হোসেন জুয়েল
শিক্ষক, সাংবাদিক ও গবেষক

Side banner