ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ১৩৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বায়োমেট্রিক ডিজিটাল হাজিরা মেশিন বসানো হয়েছিল ৬ বছর আগে। লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে এসব মেশিন কেনা হলেও বর্তমানে প্রায় সব মেশিন অকেজো পড়ে আছে। কিছু মেশিনের হদিসই পাওয়া যায়নি। ‘স্লিপ ফান্ড’ থেকে শিক্ষকদের অর্থ এবং সরকারের বরাদ্দের এ প্রকল্প এখন পুরোপুরি ব্যর্থ। সঠিক তদারকি বা রক্ষণাবেক্ষণের উদ্যোগ না নেওয়ায় মেশিনগুলো অকেজো হয়ে আছে।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ১৩৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী, বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। অর্থের উৎস স্লিপ ফান্ড। প্রতিটি বিদ্যালয়ের শিক্ষককে স্লিপ ফান্ড থেকে গড়ে ২০-৩০ হাজার টাকা করে দিতে বাধ্য করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া ০৬ (বাঞ্ছারামপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ক্যাপ্টেন এবি তাজুল ইসলামের ভাগিনা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উজানচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী জাদিদ আল রহমান জনি।
মেশিনগুলো কেনা হয়েছিল কাজী জাদিদ আল রহমান জনি চেয়ারম্যানের মালিকানাধীন কাজী কমিউনিকেশন লিমিটেড এর মাধ্যমে এবং নির্ধারিত ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান থেকে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাজার যাচাই করে তাদের পছন্দমতো সাশ্রয়ী মূল্যের মেশিন কিনতে পারবেন। কিন্তু জনি চেয়ারম্যান তার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নির্ধারিত ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান থেকে মেশিন কিনতে বাধ্য করেন। এতে বাজার যাচাইয়ের সুযোগ পাননি শিক্ষকরা। তাছাড়া ওই সময় জনি চেয়ারম্যানের ভয়ে কোন শিক্ষক প্রতিবাদও করার সাহস পাননি।
বর্তমানে মেশিনগুলো মাকড়সার জালে আবৃত হয়ে আছে। সংযোগ না থাকায় এগুলো অকার্যকর হয়ে আছে। শিক্ষকদের অভিযোগ, জনি চেয়ারম্যান নিম্নমানের মেশিন কিনে প্রকল্পের টাকা লোপাট করেছে। বাজারমূল্যের চেয়ে মেশিনগুলোর দাম ছিল ৪-৫গুণ বেশি। তাছাড়া উপজেলার ১৩৯টি স্কুলে দেয়ার কথা থাকলেও ২০-২৫টি স্কুলে দেয়া হয়েছে বলে জানা যায়।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলার তৎকালিন শিক্ষা কর্মকর্তা নৌসাদ মাহমুদ, জনি চেয়ারম্যান এবং শিক্ষকদের বেশ কয়েকজনের যোগসাজসেই নিম্নমানের মেশিন কিনে টাকা লুটপাট করা হয়েছিল। এনিয়ে একাধিকবার বিভিন্ন সংবাদপত্রে লেখালিখি হলেও কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা সচেতনমহল উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
আপনার মতামত লিখুন : :