• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২ আশ্বিন ১৪৩২
Bancharampur Barta
Bongosoft Ltd.

রাস্তার কাজ না করেই টাকা তুলে নিলেন ঠিকাদার


বাঞ্ছারামপুর বার্তা | স্টাফ রিপোর্টার সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৫, ০৭:৩২ পিএম রাস্তার কাজ না করেই টাকা তুলে নিলেন ঠিকাদার

পিরোজপুর সদর উপজেলা থেকে রায়েরকাঠী হয়ে নাজিরপুর-শ্রীরামকাঠী পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার সড়ক এখন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় রাস্তার প্রায় সব অংশেই দেখা গেছে গর্ত ও খানাখন্দ। শুকনা মৌসুমে ধুলার ঝড় আর বর্ষায় জমে থাকা পানিতে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন এলাকাবাসী।
এই সড়কটি জেলার গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক কেন্দ্র শ্রীরামকাঠীর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের একমাত্র রাস্তা। আগে প্রতিদিন শত শত যান চলাচল করত। এখন কেউ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া আর এই পথে চলেন না। সাধারণ মানুষ বিকল্প রাস্তায় চলাচল করছেন, এতে সময় ও খরচ দুটোই বেড়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্র জানায়, ‘ইফতি ইটিসিএল’ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে এই রাস্তার নির্মাণকাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়। দুইটি প্যাকেজে মোট ১৭ কোটি ২৬ লাখ টাকার কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল ২০২৪ সালের ৬ নভেম্বর, শেষ হওয়ার কথা ২০২৫ সালের ৫ নভেম্বর। কিন্তু অভিযোগ আছে, কাজ শুরু না করেই ঠিকাদার পুরো টাকা তুলে নিয়েছে।
এলাকাবাসী বলেন, ৬ বছরের বেশি সময় ধরে তারা এই দুর্ভোগে আছেন। আগে রাস্তায় প্রতিদিন অনেক গাড়ি চলত, এখন চলেই না বলা যায়। তারা অভিযোগ করেন, ঠিকাদার টাকা তুলেও কাজ করেননি, অথচ তাদের কষ্ট দেখার কেউ নেই। এলাকাবাসী দ্রুত সড়কটির কাজ শুরুর দাবি জানিয়েছেন।
স্থানীয় অটোরিকশা চালক শাহিন শেখ বলেন, এই রাস্তায় গাড়ি চালানো মানেই জীবনের ঝুঁকি নেওয়া। প্রতিদিন গাড়ির চাকা গর্তে পড়ে নষ্ট হয়, যাত্রীরাও ঝুঁকিতে থাকেন। আগে দিনে ১৫-২০ বার যাতায়াত করতাম, এখন ১-২ বারও যাই না।
ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, ব্যবসার পণ্য আনতে দ্বিগুণ ভাড়া দিতে হচ্ছে। চালকেরা এই রাস্তায় আসতে চান না, ঘুরে আসতে হয়। এতে সময় ও খরচ দুটোই বাড়ছে। ব্যবসায় বড় ক্ষতি হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রুমানা আক্তার বলেন, স্কুলে যেতে গিয়ে ধুলা আর কাদার ভোগান্তি পোহাতে হয়। বর্ষায় হাঁটা যায় না, শুকনো মৌসুমে ধুলায় শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। এমন রাস্তা পড়াশোনার আগ্রহ কমিয়ে দেয়।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল হাকিম বলেন, এই রাস্তায় অসুস্থ কাউকে হাসপাতালে নেওয়া যায় না। অ্যাম্বুলেন্স গর্তে আটকে যায়। এখনই ব্যবস্থা না নিলে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
জানা গেছে, পিরোজপুর সদর উপজেলায় মোট ৭০০ কিলোমিটার সড়ক থাকলেও এর মধ্যে প্রায় ৪০০ কিলোমিটারই চলাচলের অযোগ্য। এর মধ্যে পিরোজপুর-শ্রীরামকাঠী সড়কটি সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে।
এ বিষয়ে এলজিইডি পিরোজপুরের সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী লায়লা মিথুন বলেন, এই রাস্তার টেন্ডার হয়েছিল, কিন্তু কাজ হয়নি। সম্ভবত টাকা উত্তোলন হয়ে গেছে। বিষয়টি নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) মামলা হয়েছে। তারা তদন্ত করছেন। সরকারি টাকা কাজ না করেই তোলা হয়েছে, তাই মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ ছাড়া আমরা কিছু করতে পারছি না।

Side banner