দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর প্রবীণ চামড়া ব্যবসায়ী আলী আকবর হাশমী (৬৫) পৈত্রিক সূত্রে দীর্ঘদিন ধরে এ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। প্রতি বছর কোরবানির মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন খুচরা ও মৌসুমী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চামড়া কিনে নিজ আড়তে সংরক্ষণ করেন তিনি। তবে এ বছর কেনা চামড়া নিয়ে পড়েছেন দুশ্চিন্তায়।
এ বছর তিনি দেড় হাজার গরুর ও এক হাজার ছাগলের কাঁচা চামড়া কিনেছেন। প্রতিটি গরুর চামড়া গড়ে ৮৫০ টাকায় এবং ছাগলের চামড়া ৫০ টাকায় কেনা হয়েছে। এর সঙ্গে সংরক্ষণ খরচ যোগ হয়ে প্রতিটি গরুর চামড়ার মোট খরচ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ হাজার ১০০ টাকা এবং ছাগলের ২০০ টাকা।
এই দামে কেনা চামড়া বিক্রি করতে হলে বাজার থেকে এর চেয়ে বেশি দাম পাওয়া জরুরি। কিন্তু ঢাকার ট্যানারি মালিকদের সিন্ডিকেটের কারণে বাজার পরিস্থিতি আশানুরূপ নয় বলে জানান আলী আকবর হাশমী। এ পর্যন্ত তিনি প্রায় ১৮ লাখ ৫০০ টাকার চামড়া কিনেছেন। তবে লাভ-লোকসানের হিসাব মিলবে তখনই, যখন ঢাকার ট্যানারি মালিকদের মনোনীত নাটোর, পলাশবাড়ী ও তারাগঞ্জের আড়তদাররা কেনাকাটা শুরু করবেন।
আলী আকবর হাশমী বলেন, একসময় সরাসরি ঢাকার ট্যানারিতে চামড়া পাঠাতাম। কিন্তু টাকার জন্য বছরের পর বছর ঘুরতে হতো। এখনও কয়েকজন ট্যানারি মালিকের কাছে আমার অন্তত ৩০ লাখ টাকা আটকে আছে। একজন তো ব্যবসা গুটিয়ে উধাও হয়ে গেছেন। বাধ্য হয়ে এখন ট্যানারির মনোনীত আড়তদারদের কাছে চামড়া বিক্রি করি। তবুও টাকা তুলতে ৩-৪ মাস সময় লেগে যায়। ফলে ব্যাংকের সুদের বোঝা বাড়তে থাকে।
তিনি আরও জানান, গত বছর চামড়া বিক্রি করে প্রায় ৫ লাখ টাকা লোকসান গুণতে হয়েছিল। এবারও সরকার নির্ধারিত দাম থাকলেও বাস্তবে সেই দাম পাওয়া যাচ্ছে না। সিন্ডিকেটের কারণে ক্ষুদ্র ও মৌসুমী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চড়া দামে চামড়া কিনে ভালো দামে বিক্রি করা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
আগামী শুক্রবার (১৩ জুন) ট্যানারির লোকজন মাঠে নামলে বোঝা যাবে এবার লাভ হবে, নাকি আবারও লোকসান গুনতে হবে। একই দুশ্চিন্তায় রয়েছেন ফুলবাড়ীর অন্যান্য চামড়া ব্যবসায়ীরাও।
আপনার মতামত লিখুন : :