সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার কাজিপুরা গ্রামের রাফি ভূইয়া পেশায় একজন সরকারি চাকরিজীবী। কিন্তু দাপ্তরিক ব্যস্ততার পাশাপাশি তার আরেকটি পরিচয় রয়েছে তিনি একজন সফল খামারি। শখের বসে শুরু করা গরু পালনের সেই উদ্যোগই আজ তাকে এনে দিয়েছে জনপ্রিয়তা, আত্মবিশ্বাস ও আর্থিক সাফল্য।
রাফির খামারে এখন সবার চোখের মণি একটি বিশালদেহী লাল রঙের ষাঁড়, যার নাম ‘হিরো দ্যা ডন’। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে প্রায় ১ হাজার ৩০০ কেজি ওজনের এই ষাঁড়টির দাম হাঁকা হচ্ছে ১৫ লাখ টাকা। এর আকৃতি ও সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে প্রতিদিনই দূরদূরান্ত থেকে অনেকেই ছুটে আসছেন ষাঁড়টিকে একনজর দেখার জন্য।
গাজী গোলাম সারোয়ার জিন্নাহর ছেলে রাফি তার খামার গড়ে তোলার যাত্রা শুরু করেন মাত্র ৫ লাখ টাকার একটি ব্যাংক ঋণ নিয়ে। প্রথমে তিনি দুটি ফ্রিজিয়ান জাতের গরু কেনেন ২ লাখ ৫০ হাজার টাকায়। লাভের মুখ দেখার পর ধীরে ধীরে বাড়াতে থাকেন গরুর সংখ্যা। বর্তমানে তার খামারে ১১টি গরু রয়েছে, যেগুলোর মোট বাজারমূল্য প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা।
‘হিরো দ্যা ডন’ ছাড়াও ঈদুল আজহার বাজারের জন্য রাফির খামারে প্রস্তুত রয়েছে আরও তিনটি গরু। এর মধ্যে অন্যতম ৯৫০ কেজি ওজনের গীর জাতের ‘সোনা’, যার দাম চাওয়া হচ্ছে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এ ছাড়া রয়েছে ৬৫০ কেজির ‘ক্রাস বাহমার’ (২ লাখ টাকা) ও ৮০০ কেজির ‘গ্রামার ক্রস বাহম’ (৩ লাখ টাকা)।
গরুগুলোর পরিচর্যা প্রসঙ্গে রাফি বলেন, আমি গরুগুলোকে প্রাকৃতিকভাবে মোটাতাজা করি। খাওয়াই কাঁচা ঘাস, ছোলা, ভূটা ও ভূষি। কোনো কেমিক্যাল ব্যবহার করি না।
রাফি মনে করেন, কোনো কাজই ছোট নয়। নিজের ওপর বিশ্বাস আর ধৈর্য থাকলে সাফল্য আসেই। চাকরির পাশাপাশি মন দিয়ে খামারে সময় দেওয়াতেই আমি আজ এই অবস্থানে এসেছি।
ষাঁড়টির নাম ‘হিরো দ্যা ডন’ রাখার কারণ জানাতে গিয়ে রাফি বলেন, এর চঞ্চলতা, নড়াচড়া আর চলাফেরা সব কিছুতেই একটা বীরত্বের ছাপ, ঠিক যেন কোনো সিনেমার ডনের মতো।
তরুণদের উদ্দেশে রাফির পরামর্শ, যে কাজেই মনোযোগ দেওয়া যায়, সেটাই বড় কাজ। কোনো কিছু ছোট করে দেখা উচিত নয়। পরিবারের সহযোগিতায় আজ আমি এই সফলতার মুখ দেখছি।
আপনার মতামত লিখুন : :